Wednesday, 25 January 2017

শাস্ত্রীয় ভিক্ষারী:

                                       
শাস্ত্রীয় ভিক্ষারী:

  
শাস্ত্রীয় ভিক্ষারী:   

প্রশান্ত কুমার মণ্ডল                                 
ব্রাহ্মণ্যবাদীদের চরম নির্লজ্জতার প্রমান দেখুন:-
সমস্ত ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুধর্মগ্রন্থ তথা শাস্ত্রগ্রন্থ শুধুই ব্রাহ্মণের কথা বলেছে,ব্রাহ্মণের মঙ্গল চেয়েছে,ব্রাহ্মণের উন্নতি চেয়েছে,মানুষের কথা বলেনি,মানুষের উন্নতি চায়নি।কেন?কারন সমস্ত ধর্মগ্রন্হ এবং শাস্ত্রগ্রন্হের লেখক যে লোভী ব্রাহ্মণহিন্দুধর্মে ব্রাহ্মণ শাস্ত্রকারদের মহান অবদান হল জঘণ্য জাতব্যবস্হা বা বর্ণপ্রথা,যা হিন্দুধর্মকে খন্ডবিখন্ড করে দুর্বল ও ক্ষয়িষ্ণু করেছে।১৮টি পুরাণের মধ্যে কেবল দুটি(গড়ুরপুরাণ ও ব্রহ্মবৈর্বরত পুরাণ)এ ব্রাহ্মণ্য ধান্দাবাজি দেখুন।এখানে মানুষ নয়,প্রকৃত ভিখারি নয়,শুধুই শাস্ত্রীয় ভিখারি অর্থাৎ ব্রাহ্মণকে যথা সর্বস্ব দান করার কথা বলা হয়েছেআসল কথা হল হাজার হাজার দেবদেবী বানিয়ে অসংখ্য শাস্ত্রগ্রন্থ বানিয়ে মানুষকে ঠকাচ্ছে ব্রাহ্মণশ্রেনীঅসংখ্য দেবদেবী পুতুলমাত্র,এদের সামনে রেখে চলছে ব্রাহ্মণশ্রেনীর লুন্ঠন কার্যপ্রায় সমস্ত ধর্মশাস্ত্রগ্রন্থে ব্রাহ্মণ্যবাদীরা নির্লজ্জ ভাবে প্রচার করেছে ব্রাহ্মণকে সন্তুষ্ট করো তাহলে দেবতারা সন্তুষ্ট হবে।তারা দেবদেবীর মুখ দিয়ে বলিয়েছে আগে ব্রাহ্মণকে দাও,দেবদেবীকে না দিলেও চলবেআসলে ধর্মান্ধ অজ্ঞ মানুষকে বোকা বানাতে তারা কাল্পনিক দেবতাদের সাহায্য নিয়েছে মাত্রসমস্ত হিন্দু ধর্মশাস্ত্রগ্রন্থ পড়লে দেখা যাবে সমস্ত দেবতারা বলছে ব্রাহ্মণকে তুষ্ট করো,ব্রাহ্মণকে যথা সর্বস্ব দাওগরীব মানুষকে নয় কেন?ইট,কাঠ,পাথর বা কাগজের মূর্তি(দেবদেবী)কী কথা বলতে পারে?সত্য কথা হল ব্রাহ্মন সম্প্রদায় নিজেদের ধান্দাবাজি প্রচার করেছে দেবতাদের মুখ দিয়ে,দেবতাদের বানী বলেপশুপাখীর নীতি গল্প”এর লেখক যেমন কুমীর,কচ্ছ্প,সাপ,ব্যাঙ,শেয়াল,বাঘ,পাখীকে দিয়ে কথা বলায় মানুষকে নীতি শিক্ষা দেবার জন্য ঠিক তেমনি ব্রাহ্মণ শাস্ত্রকাররা কাল্পনিক দেবতাদের মুখে কথা বসিয়েছে ধর্মভীরু মানুষকে ঠকানোর জন্য।যতদিন না পর্যন্ত মানুষের মন থেকে ব্রাহ্মণ ও তাদের তৈরী সমস্ত কাল্পনিক দেবদেবীর প্রতি দূর্বলতা,ভয়,ভক্তি দূর হচ্ছে ততদিন ব্রাহ্মণশ্রেনী মানুষকে ঠকিয়ে যাবেব্রাহ্মণের স্বার্থে বানানো পুতুল দেবদেবীকে যারা বিশ্বাস করে,তাদের মনে কী এ প্রশ্ন জাগে না,যে দেবতারা গরীব-দুঃখী মানুষের কথা না বলে কেবল ব্রহ্মণের চিন্তায় কেন পাগল হল?ব্রাহ্মণদের মনগড়া অসংখ্য দেবতা যেমন শ্রীকৃষ্ণ,শিব,ব্রহ্মা...........বাস্তবে যদি এদের কোন অস্তিত্ব থাকতো তাহলে তারা অবশ্যই ভারতকে ব্রাহ্মণশূণ্য করতো কারণ মানুষকে জাতের নামে হীন,নীচ পশুপ্রতিপন্ন করে,তাদের কষ্টার্জ্জিত সম্পদ লুঠ করছে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়।আর দেবদেবীর নামেই তারা একাজ করছে।কৃষ্ণকে তারা এই কাজে বেশী ব্যবহার করেছে।  
নিম্নে ব্রাহ্মণের চরম নির্লজ্জতার প্রমান দেখুন।
                          গড়ুর পুরাণঃ আচার্য পঞ্চানন তর্করত্ন
            গঃপুঃউত্তর খন্ডে প্রশ্ন কর্তা হল গড়ুর আর উত্তর দিয়েছে শ্রীকৃষ্ণ
               আসল সত্য হল, প্রশ্ন কর্তা ব্রাহ্মণ এবং উত্তরও দিয়েছে ব্রাহ্মণ
ব্রাহ্মণ লেখক তার সৃষ্ট কাল্পনিক দেবতা ‘শ্রীকৃষ্ণে’র মুখ দিয়ে নিজের সম্প্রদায়ের ভরণপোষনের      ব্যবস্থা করে নিয়েছে।দেখুন কৃষ্ণ নামের আড়ালে ব্রাহ্মণের কী রকম নির্লজ্জ উপদেশঃ-
১।বেদবিদ ব্রাহ্মণকে যে ব্যাক্তি ইক্ষু,যব,গোধূমাধি,শস্যশালিনী ভূমি দান করে করে,তাহার পূনর্জন্ম হয় না।(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১,শ-৯বেদবিদ ব্রাহ্মণকে সর্ব্বস্ব দান করিলে ব্রহ্ম বধোৎপন্ন পাপ বিনাশ হয়।(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫২,শ-৫)
ব্রাহ্মণকে সর্বোৎকৃষ্ট দান হচ্ছে ভূমি দান।(পূর্ব্বখন্ড)
ব্রাহ্মণকে বিদ্যা প্রদান করলে ব্রহ্মলোকে বসতি হয়(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১,শ-১০)
বৈশাখের পূর্নিমা তিথিতে উপবাসী থেকে - জন ব্রাহ্মণকে ভুরিভোজ করালে সর্বপাপ নষ্ট হয়(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১,শ-১২)
যে ব্যাক্তি মধু,ঘৃত সুবর্ন ব্রাহ্মণকে দান করে সে সর্বপাপ হতে মুক্ত হয়(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১)
বৈশাখের পূর্নিমাতে ব্রাহ্মণকে দান ধ্যান করলে সর্বভয় মুক্তি ঘটে(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১,শ-১৫)
 যে ব্যাক্তি যে যে দেবতার আরাধনা করতে চায়,সে যত্নসহকারে ব্রাহ্মণকে অর্চ্চনাপূর্বক ভোজন করালে সেই সেই দেবতা তার প্রতি সন্তুষ্ট হয়(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১,শ-১৯)        
ব্রাহ্মণকে গো,ছাতা,পাদুকা,তেল,সুগন্ধি,ভূমি,সম্পত্তি,ধান্য,সুপথ্য,বস্ত্র দান করলে…..কি কি লাভ হবে এবং কোন কোন স্বর্গে যাবে তার বিধান আছে                              
(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১,শ্লোক ২১-২৯)ব্রহ্মবৈর্বরত পুরানের মতো এখানেও তার লোভ দেখানো হয়েছে
যাহার যে যে বস্তু প্রিয় সেই সেই বস্তু গুনশালী ব্রাহ্মণকে দান করবে(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১)
১০কোনো ব্যাক্তি স্বর্গকামনায়,সর্বপাপ নাশের জন্য যদি কোনো ব্রাহ্মণকে গো্‌,ভূমি……………ইত্যাদি দান করতে চায় আর যদি কোনো পাপাত্মা দাতাকে নিবারন করতে চায় তবে পাপিষ্ঠ নরকে যাবে
 ১১দুর্ভিক্ষকালে যদি অনাহারে কোনো ব্রাহ্মণের প্রানবিয়োগ হচ্ছে দেখে কেউ ম্রিয়মান থাকে তবে সে ব্রহ্ম বধ পাপে পতিত হবে(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১,শ-৩২)
১২বেদবিদ ব্রাহ্মণকে অন্নদান করলে ব্রহ্মহত্যা জনিত পাপ হতে মুক্ত হয়(পূর্ব্বখন্ড অধ্যয় ৫২,শ-৪)
১৩ব্রতচারণকালে ব্রতী শান্ত শুদ্ধচিত্তে ভূমিতে শয়ন উপবাস দ্বিজপূজা করবে(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫২,শ-১৮)
১৪ব্রাহ্মণকে ভূমি‌,প্রদী্,অন্ন,বস্ত্র, ঘৃত দান করলে শ্রীলাভ হয়(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১)
১৫ব্রাহ্মণকে গৃহ,ধান্য,ছত্র,মালা,ফল,বৃক্ষ,যান,ঘৃত,জল,শয্যা দান করলে স্বর্গলাভ হয়(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১)
     এখান থেকে গড়ুর পুরাণের উত্তর খন্ড শুরুঃ-………………………………………..
১৬শ্রীকৃষ্ণ বলছেব্রাহ্মণগন সর্বদা সত্যবাক্য বলিয়া থাকে,কদাচ মিথ্যা বলে নাঅতএব হৃদয়ে এই চিন্তা করিবে ব্রাহ্মণগনের বাক্য ভগবানের বাক্য(উঃখন্ড,অধ্যায় ২১,শ-২০)
১৭ব্রাহ্মণের দোষ কীর্তন,এসব প্রেতদোষে উৎপন্ন হয়
১৮ব্রাহ্মণকে প্রতিশ্রুতিমত দান না করলে জম্বুক হয়ে জন্মাতে হয়(উঃখন্ড,অধ্যায়-২,শ-৮২এবং অধ্যায় ৪৪,শ্লোক-২০)
১৯কোনো অভিলাস না করে প্রতিদিন ব্রাহ্মণকে যা কিছু দান করা যায় তা নিত্যদান(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫১,শ-৫)
২০সব রকম শ্রাদ্ধ বিফল যদি ব্রাহ্মণকে দান ভোজন না করানো হয়
২১ব্রতশেষে সুবর্ন দক্ষিনার সহিত ব্রাহ্মণ ভোজন করালে ব্রত সফল হবে এবং সর্ব সম্পত্তি লাভ হবে
২২দ্বিজাতিকে সর্ব উপকরন যুক্ত শয্যাদান করলে অপ্সরাগনে সমাকীর্ন বিমানে বিহার করতে পারে এবং ইন্দ্রলোকে বাস করতে করতে ইহ লোকের রাজা হতে পারে।(উঃখন্ড,অধ্যায় ৫,শ-২৬)
২৩যে ব্যাক্তি সর্ব্বোপকরন যুক্ত দোষ বর্জিত যুবা অশ্ব ব্রাহ্মণকে প্রদান করে সে স্বর্গলোকে সম্মানিত হয়(উঃখন্ড,অধ্যায় ৫,শ-২৮,২৯)
২৪যদি কেহ ব্রাহ্মণকে নবমেঘবর্না সমধিক দুগ্ধবতী মহিষী প্রদান করে তবে সর্বলোক জয় করে চিরকাল সুখে বাস করে(উঃখন্ড,অধ্যায় ৫,শ-৩১)
২৫ ব্রাহ্মণকে বস্ত্রদান,অন্নদান, অন্যান্য উপকরনসহ গৃহ দান করলে কখোনো বংশ নাশ হয় না
২৬শ্রীকৃষ্ণ বলছেনবিপ্রকে ছত্রদান করলে পথে গমনকালীন প্রীতিকর ছায়া প্রাপ্ত হয়( উঃখন্ড,অধ্যায় ৫,শ-২০-৩৫ পর্যন্ত দানের বিরাট ফর্দ আছে ( ছাতা দিন ব্রাহ্মণের মাথায়,ছায়া পড়বে আপনার মাথায় ?)ব্রাহ্মণকে অন্ন,ব্যজন,ভোজন পাত্র,দুগ্ধবতী গাভী,জলপাত্র,বস্ত্র.........ইত্যাদি দান করলে কোনদিন এসবের অভাব হবে না।
২৭মৃতের পারিত্রিক সুখের জন্য শ্রদ্ধা ভক্তিসহ ত্রয়োদশবিধ,পঞ্চবিধ অথবা ত্রিবিধ দান করবেব্রাহ্মণকে ভোজন করাবে শেষে গাভী দান করবে
২৮বৈতরনী পারের জন্য ব্রাহ্মণকে গাভী দান না করলে কিন্তু  সব বেকার(উঃখন্ড-অধ্যায় ১৭,শ-৩০)
২৯প্রতিবছর ত্রয়োদশিতে শ্রাদ্ধ করিবে এবং ব্রাহ্মণকে দান ধ্যান করবে তাহলে শ্রাদ্ধকর্তা পুত্র,শ্রেষ্ঠত্ব,সৌভাগ্য,
সমৃদ্ধি,রাজ্য,আরগ্য,সমাজে প্রাধান্য বানিজ্যে লাভবান হবেআরো অনেক কিছুর লোভ দেখানো হয়েছে
৩০শ্রাদ্ধ কার্যের শেষে ব্রাহ্মণকে যথাসর্বস্ব দান করে বিসর্জ্জন করিবে
৩১চন্দ্রসূর্য গ্রহনকালে ইষ্টমন্ত্রজপ,তীর্থসেবা,দেবার্চ্চনও ব্রাহ্মণপূজা করিলে সর্বপাপ নষ্ট হয়(পূর্ব্বখন্ড অধ্যায় ৫২,শ-২১)
৩২গো,ভোজ্য,পাদুকা,ছত্র স্বর্নঅঙ্গুরী ব্রাহ্মণকে দক্ষিনা দিলে সর্ব্বপাপ নাশ হয়।(উঃখন্ড-অধ্যায় ৫,শ-১৮৩)
৩৩গোময়ালিপ্ত স্হানে অবস্হান করে যদি ব্রাহ্মণকে দান করা হয় তবে সব পাপ দূর হয়
৩৪দেবতা সকল শয্যাদানের প্রশংসা করেন অতএব জীবিতদশায় শয্যাদান করিবে ব্রাহ্মণকেকারন জীবন অনিত্য,মরন হলে পর আর কে দান করিবে?                     
(উঃখন্ড-অধ্যায় ৩৪,শ-৬০)কোন পুত্র মৃত ব্যাক্তির উদ্দেশ্যে শয্যা দান না করতে পারে তাই জীবিত অবস্হায় স্বহস্তে করিবেচরম নির্লজ্জ কৃষ্ণ না ব্রাহ্মণ?  
৩৫।ব্রাহ্মণকে অন্নদান না করলে পরজন্মে কাক হয়ে জন্মাতে হবে(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায় ২২৯,শ-২০)।শহরে মানুষ ব্রাহ্মণকে অন্নদান করে না তাই তারা বেশী কাক হয়,তাই কী?আবার গ্রামে লোকে ব্রাহ্মণকে বেশী অন্নদান করে বলে গ্রামে কাকের সংখ্যা কম,তাই কী?গ্রামের লোক মরে কম কাক হচ্ছে কী?কাকেরা কী সব হিন্দু?
৩৬/যে ব্যক্তি ব্রাহ্মণকে প্রতিশ্রুতি মত অর্থপ্রদান করে না,সে অন্য জন্মে শৃগালত্ব প্রাপ্ত হয়(অধ্যায় ৪৪,শ- ২০)।তাহলে  হিন্দুরা সব শৃগাল হয়?
৩৭/বৃত্তিহীন ব্রাহ্মণকে বৃত্তির ব্যবস্থা করা ও দূর্বল ব্রাহ্মণকে রক্ষ্যা করা পূণ্যকর্ম(অধ্যায় ৪০,শ-১১)।
৩৮/ঋগ্বেদাধায়ী ব্রাহ্মণকে শষ্যপূণ্য ভূমি এবং যজুর্বেদাধায়ী ব্রাহ্মণকে পয়স্বিনী গাভী প্রদান করিবে।(অধ্যায় ৩৮,শ-৩৯)
৩৯/অশৌচ হতে মুক্ত হতে গেলে ক্ষত্রিয় দ্বিগুন,বৈশ্য তিনগুন ও শূদ্র চারগুন অর্থ ব্রাহ্মণকে দান করবে।
৪০/বেদবিদ ব্রাহ্মণকে কন্যাপ্রদান করিলে,স্বকূলে পরিবেষ্টিত হয়ে ইন্দ্রলোকে বাস করে।(অধ্যায় ৩৭,শ-৩৭)
৪১/ব্রাহ্মণকে সর্ব্বস্ব দান করলে মোক্ষপ্রাপ্তি হয়।(অধ্যায় ৩৭,শ-৩২)
৪২/ব্রাহ্মণকে পিতার উদ্দেশ্যে দান করলে শতগুন,মাতার উদ্দেশ্যে দান করিলে সহস্রগুন,ভগ্নীর উদ্দেশ্যে দান করিলে শত সহস্রগুন ও ভ্রাতার উদ্দেশ্যে দান করলে অক্ষয় ফললাভ হয়।(অধ্যায় ৩৬,শ-৩১,৩২)
৪৩/ব্রাহ্মণের পাদ প্রক্ষালনপূর্বক যথোপচারে অর্ঘ্যাদি দ্বারা পূজা করিবে।(অধ্যায় ৩৪,শ-৫২)
৪৪/ব্রাহ্মণগন কখনো মিথ্যা বলে না্‌,সর্বদা ইহা হৃদয়ে রাখিবে।(অধ্যায় ২১,শ—২০)
৪৫।তবে কিছু ব্যাপার আছে যেখানে ব্রাহ্মণের স্বার্থে ঘা লাগবে না সেখানে সম আইন।যেমন সহমরণ বিষয়ে ব্রাহ্মণ-চন্ডালের বিধি সমান।
৪৬।কোন পাপকে তুচ্ছজ্ঞান করিবে না।সর্ব্ববিধ পাপের জন্য ব্রাহ্মণকে যথাবিধি দান করিবে।(অধ্যায় ৫)
৪৭।সকলকেই জীবদবস্হায় স্বহস্তে দান করিবে,কারণ নিজের মরণ হইলে তাহার মঙ্গলের নিমিত্ত কে আর দান করিয়া  থাকে (উঃখঃ৪৪/৭০)
৪৮।যে ব্যক্তি ব্রাহ্মণকে উত্তমরুপে ধেনু দান করে সে সর্ব্ববিধ কাম্যলাভ করে।সূস্হ ব্যক্তি দান করিলে শতগুন ফল পায়।(৪৪ অধ্যায়,শ্লোক-৬৮)
৪৯।যে ব্যক্তি ব্রাহ্মণকে প্রতিশ্রুতিমত দ্রব্য প্রদান করে না সে পাপী।এই পাপী নরকের নদীতে কষ্ট পাবে।(৪৪ অধ্যায়,শ্লোক-৪৬)
৫০।ক্ষুধাতুর ব্রাহ্মণ ভোজনাকাঙ্খী হইয়া উপস্হিত হইলে কেহ যদি অত্যাচার করে তবে সেই পাপী বৈতরনী নদীতে ক্রিমি দ্বারা ভক্ষিত হতে থাকে।(অধ্যায় ৪৪,শ্লোক-৪৫)
৫১।ব্রহ্ম হত্যাকারীদিগের ক্ষয়রোগ ও কুষ্ঠরোগ হয়।(অধ্যায় ২,শ-৬২ এবং৪৪,শ্লোক-১১)(অধ্যায় ৪৪,শ-১১)
৫২।পাপী ব্যক্তিরা স্বকৃত পাপের প্রায়শ্চিত্য না করিয়া যমলোকে গেলে বহুবিধ যাতনা ভোগ করে এবং নানা জীবরুপে জন্মাতে থাকে এবং পরে মানুষ জন্ম হলেও পূর্বের পাপ ফুটে ওঠে।(অধ্যায় ৪৪,শ্লো-৯,১০)
৫৩।ব্রাহ্মণকে পর্য্যুষিত ভোজন বা পর্য্যুষিক্ত অন্ন প্রদান করিলে কুব্জতা প্রাপ্ত হয়।(অধ্যায় ২,শ-৭৯ এবং অধ্যায়,৪৪ শ্লোক ১৩,১৪)
৫৪।ব্রহ্মঘাতী ব্যক্তি মৃগ,অশ্ব,শূকর ও উষ্ট্র যোনীতে জন্মলাভ করে।(অধ্যায় ২,শ-৬০)
৫৫।কথোপকথন,স্পর্শ,নিশ্বাস,একযানে একাসনে বা এক শয্যায় উপবেশন,যাজন,অধ্যাপন, এবং বিবাহাদি যৌন সম্বন্ধ বশতঃ পাপ সংক্রামিত হয়।(অধ্যায় ২,শ-৬৪)
৫৬।দেবস্ব ও ব্রাহ্মণস্ব হরনে পান্ডুবর্ন ক্রিমিরুপে জন্ম হয়।(অধ্যায় ২,শ-৭)
৫৭।স্ত্রী দ্বারা জীবিকা নির্বাহ করিলে খঞ্জ হয়ে জন্মাতে হয়।(অধ্যায় ২,শ-৮)
৫৮।ব্রাহ্মনী গমন করিলে জম্বুক হয়ে জন্মাতে হয়।(অধ্যায়-২)শূদ্রপত্নী গমন করিলে বৃষ হয়ে জন্মায়।(অধ্যায় ৪৪,শ-২২)
৫৯।দ্বিজাতিদিগের পরিবাদকারী ব্যক্তি কচ্ছপযোনী প্রাপ্ত হয়।(অধ্যায় ২,শ-৮২)
৬০।বিষ্ণু,একাদশি,তুলসী,গীতা,বিপ্র ও ধেনু(গো)ষটপদী মুক্তিদায়িনী।(অধ্যায় ৪,শ-৭৭)
৬১।যে নারী পতি আর্ত্ত হইলে আর্ত্তা হয়,হৃষ্ট হইলে হৃষ্টা হয়,পতি প্রবাসগত হইলে মলিন ও কৃশ হয় এবং পতির মৃত্যূ হইলে অনুমৃতা হয় এবং পতির চিতারোহন কারী নারী পতিব্রতা নারী।(অধ্যায় ৫,শ-৯৫-৯৬)
৬২।পঞ্চগব্য যথা গোমূত্র,গোময়,গো-দুগ্ধ,গো-দধি,গো-ঘৃত খেয়ে কৃচ্ছ্রসাধন করতে হয়।(অধ্যায় ৫,শ-১৬৪)                                                                                            
৬৩।পঞ্চগব্যে স্নান করানোরও বিধান আছে।(অধ্যায় ৫,শ-১৭৪)
৬৪।ভোজ্য,পাদুকা,ছত্র ও স্বর্নাঙ্গুরীয় ব্রাহ্মণকে দান করলে সর্ব্বপাপ নাশ হয়।(অধ্যায় ৫,শ-১৮৩)
৬৬।মন্দির প্রদক্ষিনের মত ব্রাহ্মণকে প্রদক্ষিণ করলেও পূণ্য।(অধ্যায় ৮,শ-৪২)
৬৭।যে শূদ্র ব্রাহ্মণ সেবা করে না অথচ অন্যান্য কর্ম করে তাকে যম দর্শন করে।(অধ্যায় ২৪,শ-১৫)   
৬৮।মরণকালে দান করলে সেই ব্যক্তি মরণের পর ভীমাকার যমকে দেখতে পায় না এবং যমপুরে গমন করে না।(অধ্যায় ৩০,শ-২২)
৬৯।যে নর যে যে দ্রব্যদান করে সেই সেই দ্রব্য যমলোকের অগ্রে যাইয়া বর্তমান থাকে।(অধ্যায়-৩৪)
৭০।প্রতিদিন ব্রাহ্মণ ভোজন করাইবে এবং দান করিবে তাহলে পরিত্রান পাবে।(অধ্যায় ৩৬,শ-১০,১১)
৭১।যে ব্যক্তি অনশনব্রত অন্ন,জল ত্যাগ করিয়া আমার পাদোদক পানপূর্ব্বক প্রানত্যাগ করে তাকে আর কদাচ পৃথিবীতে জন্ম গ্রহন করতে হয় না।(অধ্যায় ৩৬,শ-১৫,১৬)
৭২।অনশনব্রত করিয়াও যদি কেহ জীবিত থাকে তবে সে ব্রাহ্মণকে আহ্বান করিয়া সর্ব্বস্ব দান করিবে।(অধ্যায় ৩৬,শ-১৯,২০)
৭৩।জীবিতাবস্হায় ব্রাহ্মণকে ধনদান করা কর্তব্য,যখন জীবন গমন করে তখন ধন পরাধিন হয় তখন কে সেই ধন দান করিতে চায়?(অধ্যায় ৩৬,শ-২৯)(অধ্যায় ৪৪,শ-৭০)
৭৪।শীতবাতাপযুক্ত কুঠীর নির্মান করে বিদ্বান ব্রাহ্মণকে দান করলে সার্দ্ধোকোটিত্রয় বৎসর স্বর্গলোকে বাস করিতে পারে।(অধ্যায় ৩৭,শ-৩৮)
৭৫।ব্রাহ্মণ কন্যার বিবাহ করাইলে ভূত,ভবিষ্যৎ ও বর্তমান জন্মত্রয়ার্জ্জিত পাপ নাশ হয়।(অধ্যায়৩৭,শ-৪৬)
৭৬।নির্দ্ধন ব্রাহ্মণকে দান করলে সর্বপাপ নাশ হয়।(অধ্যায় ৩৭,শ-৪৮)
৭৭।ব্রাহ্মণ ইচ্ছা না করিলে কোন ব্যক্তির অশৌচ হয় না।(অধ্যায় ৩৭,শ-৫৯)
৭৮।অশৌচমধ্যে ক্ষুধিত ব্যক্তি ও আর্ত্ত ব্রাহ্মণকে দানে দোষ নেই।তবে শূদ্রকে চতুর্গুন দান করিতে হইবে।(অধ্যায় ৩৭,শ-৬৩,৬৪)
৭৯ব্রাহ্মণকে গো দান,ভূমিদান করিলে তৎক্ষণাত সে ব্যক্তি শুদ্ধ হয়(অধ্যায় ৪০,-)
৮০দুর্ব্বল ব্রাহ্মণকে রক্ষ্যা করিলে বেদাধ্যায়ন ও বহুযজ্ঞ অপেক্ষা বেশী পূণ্য হয়(অধ্যায় ৪০,-১২)
৮১।ব্রহ্মস্ব হরণ করিলে ও ব্রাহ্মণের অপমান করিলে তাহার কুলনির্মূল হয়।ব্রাহ্মণ বিদ্যাহীন হলেও কউ তাহাকে অতিক্রম করিবে না।(অধ্যায় ৪০,শ-১৭,১৮)
৮২।যে ব্যক্তি তিল,গো,ভূমি ও সুবর্ন বহু ব্রাহ্মণকে দান করে তাহার জন্মার্জ্জিত পাপরাশি ক্ষনমাত্রে বিনষ্ট হয়।দান কখনো ব্রাহ্মণ ছাড়া অন্য বর্নে করা যাবে না।(অধ্যায় ৩০,শ-৫)
৮৩।যে সময় গাভীর যোনীপথে উদরস্হ বৎসের মুখ ও পদদ্বয় পরিদৃশ্যমান হয়,সে গাভীদান পৃথিবী দানের তুল্য।এমন দাতার অবশ্যই স্বর্গবাস।(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায় ৯৮,শ-৯,১০)
৮৪।ব্রাহ্মণের পাদপ্রক্ষালন ওউচ্ছিষ্টমার্জন এই সমস্ত কার্য্য করিলে গোদানজনিত ফল লাভ হয়।ব্রাহ্মনকে বাঞ্ছিত দ্রব্য প্রদান করিলে স্বর্গ লাভ হয়।ভূমি,প্রদীপ,অন্ন,বস্ত্র,ঘৃত দান করিলে শ্রীলাভ হয়।গৃহ,ধান্য,ছত্র,বৃক্ষ,যা্‌ন,ঘৃ্‌ত,
শয্যা...........ইত্যাদি দান করিলে স্বর্লোকে গমন করে।(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায় ৯৮,শ-৯,১০,১১,১২,১৩)
৮৫।গৃহ,শয্যা,ও স্ত্রী এই সকল বহু ব্রাহ্মণকে দান করিবে না।এই প্রকার দানে শতবর্ষ স্বর্গাবাস হয়।(উঃখন্ড,অধ্যায় ৩৪,শ-৮,৯)
৮৬।আত্মা,শম্ভু,শিবা,গৌরী,ইন্দ্র এবং অন্যান্য দেবতা সবাই শয্যা দানে প্রসন্ন হন।শয্যা দানে আত্মা অধিক সন্তুষ্ট হয়।(উঃখন্ড,অধ্যায় ৩৪,শ-৬,৭)
৮৭যদি অন্তকালে গোদান করে তবে অনন্তফল লাভ করে।আর যে যতপাদ ভূমিদান করে সে ততবর্ষ স্বর্গে বাস করে।(উঃখন্ড,অধ্যায় ৩১,শ-১,২)
৮৮ব্রতী ব্যক্তি ব্রতশেষে ব্রাহ্মণকে বস্ত্র,শয্যা, ও ফল দান করবে এবং ব্রাহ্মণকে দান ও ভোজন করাবে।(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায় ২৯,শ-৫,৬)
 ৮৯।ব্রতশেষে ব্রাহ্মণকে শয্যা,পাত্র,ছত্র,বস্ত্র,উপানহদ্বয় প্রদান করিবে।তারপর গো এবং ব্রাহ্মণকে ভোজন করাবে। (পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায় ১১৭,শ-১৪,১৫)
৯০।ব্রাহ্মণরা দানে কার্যেও বর্ণভেদ করেছে।যেমন অপর তিন বর্ণ অপেক্ষা শূদ্র ব্রাহ্মণকে চতুর্গুন দান করবে।
(উঃখন্ড,অধ্যায় ৩৭,শ-৬৩,৬৪)
৯১।সর্ব্ববিধ পাপের জন্যই যথোচিত দান কার্য্য করাইবে।কোন পাপকে তুচ্ছ বলিয়া উপেক্ষা করিবে না।(উঃখন্ড,অধ্যায় ৫,শ-১২১,১২২)                                   
প্রায় সব পুরাণ এই রকম নির্লজ্জ ব্রাহ্মণ্যবাদী ষড়যন্ত্রে পূর্ন।সমস্ত পুরাণ জুড়ে ব্রাহ্মণের মাহাত্ম প্রচার।অসংখ্য গালগল্পের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে ব্রাহ্মণের ক্ষমতা অসীম।তীর লক্ষ্যভ্রষ্ট হতে পারে কিন্তু ব্রাহ্মণের অভিশাপ ও আশীর্বাদ অব্যর্থ।মিথ্যা আশীর্বাদ ও অভিশাপের ভয় ঢুকিয়েছে ধর্মভীরু মানুষের মনে।এখনো অনেক ধর্মান্ধ শিক্ষিত মানুষও ব্রাহ্মণের অভিশাপের ভয় করে।এই ভীতিকে কাজে লাগিয়ে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় নিজেদের ভরন পোষনের ব্যবস্থা
করে নিয়েছেতারা নিজেরা তো আর ভিক্ষে চাইতে পারে না,তাই কাল্পনিক দেবদেবীর সাহায্য নিয়েছে মাত্রতাদের বানানো কল্পনিক জড় পদার্থের দেবদেবীকে দিয়ে বলিয়েছে ব্রাহ্মণকে সর্বস্ব দিয়ে দাও।ব্রাহ্মণ শাস্ত্রকাদের বক্তব্য হল তোমার যা কিছু আছে সব ব্রাহ্মণকে দিয়ে দাও বিনিময়ে ব্রাহ্মণের আশীর্বাদে তোমার উচ্চবর্নে জন্ম ও অক্ষয় স্বর্গবাস হবেই হবেপুরাণ পাঠ করলে মনে হবে হিন্দুধর্মে একমাত্র ভিক্ষারী সম্প্রদায় হল ব্রাহ্মণআর কোনো মানুষের অভাব অভিযোগ নেই।সমস্ত পাপের উৎস ব্রাহ্মণ,সমস্ত পূণ্যের উৎস ব্রাহ্মণ এবং স্বর্গের চাবি ব্রাহ্মণের কাছে।অর্থাৎ ব্রাহ্মণ ছাড়া হিন্দুদের কোনো গতি নাই।ব্রাহ্মণদের এই ফাঁদে যতদিন হিন্দুরা আটকে থাকবে ততদিন জাতিভেদ জীবিত থাকবে এবং হিন্দুধর্ম ক্ষয়িষ্ণু হতে থাকবে।ব্রহ্মবৈর্বরত পুরাণেও গরীব মানষকে নয় শাস্ত্রীয় ভিখারীকে দান ধ্যানের নির্দেশঃ-ব্রাহ্মণ্যবাদী কোনো ধর্মগ্রন্হ তথা ধর্মশাস্ত্রগ্রন্হ মানুষের কথা বলেনি, বলেছে ব্রাহ্মণের কথাপ্রতিটি ধর্মীয় গ্রন্হ ও ধর্মশাস্ত্র হল ব্রাহ্মণের সুরক্ষ্যা কবচ।
                 ব্রহ্মবৈর্বরত পুরান-বেদব্যাস রচিতঃ-
        ভাষান্তর-অধ্যাপক জগৎ লাহা, ভূমিকা-ডঃমুরারীমোহন সেন                                                   ব্রহ্মবৈর্বরত পুরানে দেখুন- ব্রাহ্মণ প্রেমী দেবতারা কেমন ব্রাহ্মণ  সেবার নির্দেশ দিয়েছে…………
আসলে কাল্পনিক দেবতা নারায়ণ,য্ম,কৃষ্ণের মুখের সমস্ত সংলাপ লোভী ব্রাহ্মণের তৈরীধর্মভীরু মানুষকে ঠকানোর জন্য তারা দেবদেবী বানিয়েছে এবং নিজেদের প্রচারে লাগিয়েছে।
Ø  প্রকৃতি খন্ড-নবম অধ্যায়ঃ নারায়ন নারদকে বলছে….
ব্রাহ্মণকে দ্বাদশ অঙ্গুলি ভূমি দান করলে অন্তীমে বিষ্ণুলোকে যাবে
ব্রাহ্মণকে শস্যযুক্ত ভূমি দান করলে বিষ্ণুপদে অবস্হান করবে
ব্রাহ্মণকে গ্রামভূমি,ধান্য দান করলে সর্বপাপ মুক্ত হয় বৈকুন্ঠে যায়
ব্রাহ্মণের ধন যে হরন করে সে নরকে যায়
Ø  প্রকৃতি খন্ড অধ্যায় -২১ যমরাজ সাবিত্রীকে বলছেন………………….
ব্রাহ্মণকে অন্ন দান করলে ইন্দ্রলোকে যাবে
ব্রাহ্মণকে আসন দান করলে বহ্নিলোকে যাবে
ব্রাহ্মণকে দুগ্ধবতী গাভী দান করলে বৈকুন্ঠে যাবে
ব্রাহ্মণকে ছত্রদান করলে বরুন লোকে যাবে
ব্রাহ্মণকে পাদুকা দান করলে বায়ুলোকে যাবে
১০ব্রাহ্মণকে মনোহর শয্যা বা বিছানা দান করলে চন্দ্রলোকে যাবে
১১ব্রাহ্মণকে হস্তীদান করলে ইন্দ্রের অর্ধাসন ভোগী হবে
১২ব্রাহ্মণকে অশ্বদান করলে বরুনলোকে যাবে
১৩ব্রাহ্মণকে শিবিকা দান করলে বিষ্ণুলোকে যাবে
১৪ব্রাহ্মণকে খাদ্যশস্য দান করলে বিষ্ণুলোকে যাবে                              ইন্দ্রপূজারী পিতা নন্দরাজকে পালিত পুত্র শ্রীকৃষ্ণের জঘন্য ব্রাহ্মণ্যবাদী উপদেশ ইন্দ্রপূজার সভায় সমবেত ক্ষুধার্ত  অতিথি ব্রাহ্মণ বর্গের উপস্হিতে শ্রীকৃষ্ণ বলছেন (কৃষ্ণজন্মখন্ড অধ্যায় ৩৩ )……………                                                                    বিপ্রগন পৃথিবীর মধ্যে দেবতুল্য বেদে একথা বারবার বলা হয়েছে
·         জনার্দনরুপী বিপ্রগন পূজার সময় নৈবেদ্য ভোজন করে থাকে।
যদি বিপ্রগন পরিতোষ লাভ করে তবে দেবতাগন পরিতুষ্ট হবে
·         যে দ্বিজগনকে অর্চনা করে তার দেবতা পূজার প্রয়োজন কি ?  
3দেবগনের নৈবেদ্য বিপ্রগণকে অর্পন করলে সুফল পাওয়া যায়
যে অন্ন বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে নিবেদিত নয় তা বিষ্ঠাতুল্য                     
দেবতাকে অন্নজল না দিয়ে কেউ যদি ব্রাহ্মণকে দেয় তবে দেবতা তাতে রুষ্ট হন না
দেবতাগন ব্রাহ্মণের মুখদিয়ে অন্নজল গ্রহন করেন        @PRASANTA  
তুমি বিপ্রের অর্চ্চনা করো                             
যত্নসহকারে ব্রাহ্মণকে পূজা করলে ইহকালে পরকালে ফল লাভ হয়
ব্রাহ্মণকে পূজা করলে কখনো নিষ্ফল হয় না
১০দক্ষিনাদান করে ব্রাহ্মণকে সন্তুষ্ট করলে সর্বধর্ম-কার্যের চেয়ে শ্রেষ্ঠ হয়



১১বিপ্রের শরীরে সমূদয় দেবতা বিরাজ করে
১২বিপ্রের চরনে সমূদয় তীর্থ।
১৩ব্রাহ্মণের পাদোদক তীর্থজলের ন্যা্য় পবিত্র
১৪যে সর্বদা বিপ্রপাদোদক পান করে সে রোগমুক্ত হয় নির্বান লাভ করে
১৫পঞ্চবিধ পাপ করে ভক্তিযুক্ত মনে ব্রাহ্মণকে ভক্তিমনে প্রনাম করলে সর্বপাপ নাশ হয়
১৬পাপী ব্যাক্তি ব্রাহ্মণকে স্পর্শ করলে মুক্তি পায়
১৭ব্রাহ্মণকে দর্শন করলে পাপ দূর হয়
১৮ব্রাহ্মণ সর্বদা বিষ্ণুরুপী
১৯তীর্থমধ্যে যত পাপ আছে ব্রাহ্মণের স্পর্শে তা দূর হয়
২০যে ব্যাক্তি সভক্তি অন্তরে বিপ্রকে আলিঙ্গন করে বিপ্রের উচ্ছিষ্ট ভোজন করে সে  সর্বপাপ থেকে মুক্ত হয়
২১সমূদয় তীর্থ দর্শনে যে ফল হয় ভক্ত বিপ্রদর্শনে অনুরুপ ফল পায়
২২ব্রাহ্মণ ভোজনে যত ব্রত,তপ,তীর্থস্হান,হরিসেবা্‌,উপবা্,মহাদান প্রভৃতি পূন্য কার্যে যে ফল হয় গো সেবা করলে সেই ফল হয়
২৩গো-গনের চরনে সকল তীর্থ অবস্হান করে
২৪গোষ্পদ চিহ্নিত মাটি ভক্তিভরে তীলক রচনা করলে তীর্থস্হানের ফল লাভ হয়
২৫।যদি সমূদয় দ্রব্য ব্রাহ্মণকে দান না করো,তবে সব ভস্মিভূত হবে।তুমি যদি এক দেবতার পূজা করো,তবে অন্য সকল দেবতা অসন্তুষ্ট হবে।আর সকল দেবতা অসন্তুষ্ট হলে ইন্দ্র কি করবে ?
অর্থাৎ কাগুজে শ্রীকৃষ্ণকে ব্রাহ্মণরা নিজেদের প্রচারে লাগিয়েছে মানুষকে ঠকানোর জন্যনিজেরা ভিক্ষে চাইলে তো আর মানুষ সারা জীবন ভিক্ষে দেবে না তাই নিজেদের পেটপূরণের জন্য  কল্পিত কৃষ্ণকে ভিক্ষারী সাজিয়েছেআর ধর্মান্ধ বোকা মানুষ অন্ধবিশ্বাসে ব্রাহ্মণের লালসার শিকার হচ্ছে।ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় অসংখ্য দেবদেবী বানিয়ে তাদের মুখে প্রচার করিয়েছে ব্রাহ্মণের ক্ষমতা দেবতুল্যঅসংখ্য কাগুজে দেবদেবীর দ্বারা ঘোষনা করা হয়েছে ব্রাহ্মণের ক্ষমতার শেষ নেই।ব্রাহ্মণ্যবাদীরা ইচ্ছামত দেবদেবী বানিয়েছে শুধু অজ্ঞ মানুষকে ভয় দেখিয়ে নিজেদের পেট পূরনের জন্যনিজেদের পেটের চিন্তা ছাড়া এরা কারুর চিন্তা করেনি।নিজেদের বানানো দেবতাদের নিজেরাই তুচ্ছ করে নিজেরাই দেবতার আসনে বসে পড়েছে।শাস্ত্রে তাই এরা বলেছে আগে ব্রাহ্মণকে তুষ্ট করো তাহলে দেবতা তুষ্ট হবে।ব্রাহ্মণের চরণেই স্বর্গ।ধর্মশাস্ত্রগুলি না পড়লে মানুষ কোনোদিন ব্রাহ্মণের এই হীন ষড়যন্ত্র ধরতে পারবে না।যেসব ধর্মভীরু মানুষ ব্রাহ্মণদের বানানো কাল্পনিক দেবদেবীকে ভয়ে ভক্তি করেন,তাদের জানা উচিত এসব কাল্পনিক দেবদেবী ঠিক পুতুল নাচের পুতুলের মত।এদেরকে পিছন থেকে নাচিয়েছে ব্রাহ্মণশ্রেনী।
এখানে কেবল গড়ুর পুরাণ ও ব্রহ্মবৈর্বত পুরাণে ব্রাহ্মণের ধান্দাবাজি দেখানো হয়েছে।বাকী ১৬টি পুরাণ(স্কন্দপুরাণ,লিঙ্গপুরাণ,মৎস্যপুরাণ,নারদপুরা‌ণ,বামনপুরাণ,ব্রহ্মপুরাণ,বরাহপুরাণ,ভাগবৎপুরাণ,মার্কন্ডীয়পুরাণ,অগ্নিপুরা্‌ণ,বায়ুপুরাণ,বিষ্ণুপুরাণ,ব্রহ্মান্ডপুরাণ,পদ্মপুরা্‌ণ,কূর্মপুরাণ,ভবিষ্যপুরাণ)-এর সবগুলিতে এমন নির্লজ্জ ব্রাহ্মণ্য ধান্দাবাজির প্রচুর নিদর্শন আছে।জঘণ্য ধান্দাবাজ ব্রাহ্মণ শাস্ত্রকারদের মতে তারাই মহান,সৎ,পবিত্র,ধার্মিক ও জ্ঞানী ব্যক্তি যারা সারা জীবন জপ-তপ-পূজা-পার্বন-হোম-যাগ-যজ্ঞ-প্রায়শ্চিত্য-শ্রাদ্ধ প্রভৃতি নিষ্ঠাভরে পালন করে শতশত ব্রাহ্মণ ডেকে সেবা,ভোজন,
দান-মহাদানে তৃপ্ত করে।যারা ব্রাহ্মণ সেবন,ব্রাহ্মণ ভোজন ও ব্রাহ্মণকে দান ধ্যান করে না তারা অসৎ,অপবিত্র,পাপী অসুর সম্প্রদায়।কাল্পনিক আত্মা,প্রেতাত্মা,অসংখ্য দেবদেবী সব যেন ব্রাহ্মণের বাড়ীর পোষা কুকুর।এরা সবাই ব্রাহ্মণের গোলাম।এরা সবাই ব্রাহ্মণের উচ্ছিষ্ট খায়।কারণ ব্রাহ্মণ্যবাদীরা তাদের শাস্ত্রে লিখেছে দেবলোক তাদের খাদ্য “হব্য” এবং পিতৃলোক তাদের খাদ্য “কব্য” ব্রাহ্মণের মুখ দিয়ে গ্রহন করেআর স্বর্গ যেন ব্রাহ্মণের বাগানবাড়ী এবং নরক ব্রাহ্মণের নর্দমা।ব্রাহ্মণের চাহিদা মত সব কিছু দিতে পারলে বাগান বাড়ীতে পাঠাবে আর না দিলে নর্দমায় ফেলবে।
ভীতু হিন্দুদেরকে ব্রাহ্মণ কিভাবে নরকে ফেলছে আর কেমন কীটপতঙ্গ,পশুপাখী বানাচ্ছে দেখুন।হিন্দুরা যদি ব্রাহ্মণের শর্ত না মানে বা ব্রাহ্মণের অবাধ্য হয় তবে নরকে যাবে।আর ব্রাহ্মণের অনুগত দাস হয়ে থাকলে স্বর্গে যাবে।
      ব্রহ্মবৈর্বত পুরান ঃ অধ্যায় -২৮
১।ক্ষুধার্থ ব্রাহ্মণ বাড়ীতে এলে সমাদর না করলে—তপ্তকুন্ড নরকে যাবে।পরে পাখী হয়ে জন্মাবে।
২।ব্রাহ্মণের বৃত্তি হরণ করলে—বিষ্ঠাকুন্ডে কৃমিরুপে জন্মায় এবং দীর্ঘকাল মূত্রভোজন করে পরে গোধিকারুপে জন্মায়।
৩।ব্রহ্মহত্যাকারী-দুষিকাকুন্ড নরকে যায়।সপ্ত জন্ম দরিদ্র গৃহে জন্মায়।
৪।ব্রাহ্মণকে প্রহার করিলে—অমৃত কুন্ডে যাবে।শতবর্ষ রুধির ভোজন এবং সপ্তজন্ম ব্যাধ হবে।
৫।ব্রাহ্মণের প্রদত্ত দ্রব্য আত্মসাৎ করিলে—শতবর্ষ বর্ষাকুন্ডে কৃকলাসরুপে জন্ম নেয়।দরিদ্র ও অল্পায়ু হয়।
৬।যে ব্রাহ্মণ শূদ্রশব দাহ করে—পূঁচকুন্ড নরকে যায়—দীর্ঘ বছর পূঁজ ভোজন করে।
৭।যে ব্রাহ্মণ শূদ্রান্ন ভোজন করে—সুরাকুন্ড নরকে যায়।
৮।যে ব্রাহ্মণ অনিবেদ্য খাদ্য ভোজন করে—তারা কৃমিকুন্ড নরকে যায়।হাজার বছর শেষে শূকর রুপে জন্মায়।
৯।ব্রাহ্মণের গব্য ও বস্ত্র হরণ করলে—পাষানকুন্ডে যায়।ব্যাধিগ্রস্হ হয়ে কষ্ট পায়।
0ব্রাহ্মণ হয়ে যে ম্লেচ্ছ সেবা করে—তপ্তমসীকুন্ডে যায় এবং তিনজন্ম পশু হয়।
১১ব্রাহ্মণের দ্রব্য ভোগ করলে==চক্রকুন্ডে যায়।
১২ব্রাহ্মণের ঘৃত হরণ করলে—জ্বালাকুন্ড নরকে যায়।মুষিকের উদরে জন্ম নেয়।
১৩ব্রাহ্মণকে নিন্দা করলে—দীর্ঘকাল নরক প্রাপ্তি।
    গড়ুর পুরাণঃ-                                                                                    
১।বিপ্রস্ব হরণ করলে-পশু বা কৃমিজন্ম হয়।(উঃখন্ড,অধ্যায় ২,শ-৭)
২।ব্রাহ্মণকে পর্য্যুষিত ভোজন করালে-ব্যক্তি কুব্জ হয়।(উঃখন্ড,অধ্যায় ২,শ-৭৯)
৩।ব্রাহ্মণকে প্রতিশ্রুতি মত দ্রব্য না দিলে—জম্বুক বা শৃগাল হয়ে জন্মায়।(উঃখন্ড,অধ্যায় ২,শ-৮২)
৪।দ্বিজাতিকে পরিবাদকারী—কচ্ছপযোনী প্রাপ্ত হয়।(উঃখন্ড,অধ্যায় ২,শ-৮২)
৫।ব্রাহ্মণ বিদ্বেষী—লালাভক্ষক নরকে যায়।(উঃখন্ড,অধ্যায় ৩,শ—৬১)
৬।ব্রহ্মঘাতী ব্যক্তি—শূকর নরকে যায়।(উঃখন্ড,অধ্যায় ৩,শ—৫৫)
৬।ক্ষুধাতুর ভোজনাকাঙ্খী ব্রাহ্মণ বাড়ীতে এলে অত্যাচার করলে।কৃমিভক্ষক নরকে যায়।(উঃখন্ড,অধ্যায় ৪৪,শ-৪৫)
৭।ব্রাহ্মণকে অন্নদান না করলে পরজন্মে কাক হয়ে জন্মাবে।(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায় ২২৯,শ-২০)

কোথাও মানুষের কথা আছে কী?নেই।কেন?হিন্দুধর্মে মানুষ নেই?হিন্দুধর্মে দূস্হ,দরিদ্র,নিঃস্ব মানুষ নেই?সমস্ত ধর্মগ্রন্থ ও শাস্ত্রগ্রন্থ জুড়ে শুধু ব্রাহ্মণকে ভরণপোষনের নির্দেশ কেন?কারণ ব্রাহ্মণ শাস্ত্রকারদের উদ্দেশ্য হল জঘণ্য জাতিভেদকে বাঁচানো আর ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়কে বাঁচানো।ধর্মগ্রন্থ ও শাস্ত্রগ্রন্থ বানানোর উদ্দেশ্য হল ব্রাহ্মণকে দেবতা বানানো,যে দেবতার কাজ হল অন্যের কষ্টার্জ্জিত সম্পদ ভোগ করা।শাস্ত্রকারেরা জানত শিক্ষার সুযোগ পেলেই মানুষ ব্রাহ্মণদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলবেই।তাই তারা তাদের তৈরী গ্রন্থগুলিতে মানুষের শিক্ষার অধিকার হরণ করার সাথে সাথে ঘোষনা করে যে ব্রাহ্মণ এবং ব্রাহ্মণের সাহায্যকারী দেবদেবীর বিরুদ্ধে কিছু বলা পাপকর্ম।ব্রাহ্মণদের বানানো মানবতাহীন ধর্মগ্রন্থ এবং শাস্ত্রগ্রন্থগুলি পড়ুন,তাহলে মানবতা তথা হিন্দুধর্মের শত্রুদের চিনতে পারবেন।ধর্মগ্রন্থ ও শাস্ত্রগ্রন্থের কোথাও মানবতার কথা তো নেই,হিন্দুর কথাও নেইসমস্ত শাস্ত্রগ্রন্থ তৈরী করেছে ব্রাহ্মণশ্রেনী,নিজেদের আখের গোছানোর জন্যমানুষের মঙ্গলের জন্য নয়,নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অসংখ্য কাল্পনিক দেবদেবী ও শাস্ত্র বানিয়েছে ব্রাহ্মণশ্রেনীআর তারা বারবার ঘোষনা করেছে,যে তাদেরকে(ব্রাহ্মণকে)সন্তুষ্ট করলে তাহলে দেবতারা সন্তুষ্ট হবে।এমন নির্লজ্জতা ও স্বার্থপরতা পৃথিবীর কোনও ধর্মে নেইহিন্দুধর্মের স্বার্থে,মানবতার স্বার্থে, ব্রাহ্মণ্যবাদীদের চাপিয়ে দেওয়া জঘণ্য বর্ণপ্রথা বা আত্মঘাতী জাতব্যবস্হা সহ সমস্ত ব্রাহ্মণ্য রীতিনীতি ত্যাগ করা উচিত।
prasanta kumar Mondal.
  ঃমতামত ব্যক্তিগতঃ
                                                                

No comments:

Post a Comment