বিভ্রান্তিমূলক, লোকঠকানো, হাস্যকর- শ্রাদ্ধকথা।
শ্রীপ্রশান্ত-কুমার-মণ্ডলঃ
“শ্রীকৃষ্ণ”
নামের আড়ালে ব্রাহ্মণের লোকঠকানো শ্রাদ্ধবিধানঃ-সমস্ত ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মীয় শাস্ত্রগ্রন্থের পাতায় পাতায় ব্রাহ্মণের গুনকীর্তন এবং উন্নতির পরিকল্পনা,ব্রাহ্মেণের মঙ্গলের কথা এবং ব্রাহ্মণের আশীর্বাদ এবং অভিশাপের অব্যর্থ কল্পকাহিনী।হাজার হাজার অলীক কল্পকাহিনীর মাধ্যমে দেখানো হয়েছে ব্রাহ্মণের অসীম ক্ষমতা।যদিত্ত মানুষ ঠকানো ছাড়া কোনো ক্ষমতা নেই।ব্রাহ্মণের প্রধান দুটি ক্ষমতা হল আশীর্বাদ এবং অভিশাপ।যদিও এখন বাচ্চারা জানে এ দুটি শুধুই লোক ঠকানো ব্রাহ্মণ্যবাদী শব্দ।ধর্মের আড়ালে অসংখ্য
গালগল্পের মাধ্যমে বোকা মানুষের মনে ঢোকানো হয়েছে ব্রাহ্মণের আশীর্বাদে সব পাওয়া
যায় এবং ব্রাহ্মণের অভিশাপে সব চলে যায়।সাধারন মানুষকে অর্থহীন আত্মা,প্রেতাত্মা,স্বর্গ,নরক,পা্প,পূর্ন এবং জন্মান্তরবাদের ভয় দেখিয়ে চলছে ব্রাহ্মণশ্রেনীর লুন্ঠনকার্য।এমনই এক লুন্ঠনকার্য হল শ্রাদ্ধকার্য।যেখানে ধর্মভীরু বোকা মানুষকে কাল্পনিক স্বর্গের
লোভ দেখানো হয়েছে।স্বামী
বিবেকানন্দ বলেন-“মৃত্যূর পর মানুষ
স্বর্গে যায় এটা কল্পনা মাত্র।সজ্জন ব্যক্তি মৃত্যূর পর স্বর্গে গিয়ে অনন্ত সুখময়
জীবন যাপন করে এ ধারনা স্বপ্ন মাত্র।স্বর্গ,নরক এসব আদিমধারনা”।(বানী ও রচনা-দশম
খন্ড-পৃষ্ঠা-১৫৯)।পরম আত্মীয়ের মৃত্যূর শোকে ভারাক্রান্ত অসহায় মানুষকে সর্বশ্রান্ত করার জন্য ব্রাহ্মণ্যবাদীদের শ্রাদ্ধবিধান।ভারতের সংখ্যাগরিষ্ঠ কালো বা কৃষ্ণ বর্নের মানুষের কাছে নিশ্চয় কোনো কালো মানুষের কথা বেশী গ্রহনযোগ্য হবে।তাই কল্পিত কালো দেবতা কৃষ্ণের মুখে ব্রাহ্মণশ্রেনী কথা বসিয়েছে মাত্র।যাঁরা ব্রাহ্মণের ফাঁদে পা দিচ্ছেন তাঁরা কি আমৃত্যূ মৃত ব্যাক্তির জন্য শ্রাদ্ধ করছেন ? পড়ে দেখুন
সারা জীবন ব্রাহ্মণ কিভাবে আপনাকে মৃত ব্যাক্তির নামে শ্রাদ্ধ করতে বলেছে।আচার সর্বস্ব হিন্দু না হয়ে যুক্তিবাদী মন নিয়ে পড়ে দেখুন,ধর্মশাস্ত্রগ্রন্থে ব্রাহ্মনরা কি লিখেছে।আপাতত শ্রাদ্ধ সম্পর্কে নীচের ধর্মীয় নির্দেশগুলি পড়ুন,তাহলে ব্রাহ্মণের চরিত্র অনেকটা পরিস্কার হবে।আর মনে রাখবেন “শ্রীকৃষ্ণ” কেবল ব্রাহ্মণ শাস্ত্রকারদের বানানো একটি কাল্পনিক দেবচরিত্র মাত্র।শ্রীকৃষ্ণ
বলছে,ব্রহ্মা বলছে,শিব বলছে,
আসলে কেউই বলছে না,বলছে লোভী ব্রাহ্মণ।কাল্পনিক
দেবদেবী তো আর কথা বলতে পারে না,এদের মুখে কথা বসিয়েছে ব্রাহ্মণ লেখক শুধুমাত্র
ধর্মভীরু মানুষকে বোকা বানানোর জন্য।
পঞ্চতন্ত্রের গল্পের লেখক যেমন শেয়াল,কুকু্র,কুমীর,কচ্ছ্প,বাঘ,হরিণ,কাক
প্রভৃতি প্রানীকে দিয়ে কথা বলায় মানুষকে নীতি শিক্ষা দেওয়ার জন্য ঠিক তেমনি
ব্রাহ্মণ লেখক ধর্মগ্রন্থ ও শাস্ত্রগুলিতে নির্জীব জড় পদার্থের দেবদেবীর মুখে কথা
বসিয়েছে মানুষকে বোকা বানিয়ে শুধুই ব্রাহ্মণের ঝুলি ভরানোর জন্য।
অর্থাৎ ব্রহ্মা বা
শ্রীকৃষ্ণ,এরা সব কাল্পনিক কাগুজে চরিত্র।ধর্মগ্রন্থের পাতায় এদের
জীবনচক্র।ধর্মগ্রন্থের বাইরে এদের কোন অস্তিত্বই নেই।দেবদেবীরা সব পুতুলনাচের
পুতুলের মত।বাস্তব সত্য হল নির্জীব জড় পদার্থের পুতুলকে পিছন থেকে নাচায় এবং কথা
বলায় মানুষ।হিন্দুধর্মের দেবদেবীরা ঠিক পুতুলনাচের পুতুলের মত।এদেরকে কথা বলিয়েছে
ব্রাহ্মণ এবং নাচিয়েছে ব্রাহ্মণ শুধুই নিজেদের স্বার্থে।
গড়ুর পুরাণঃআচার্য পঞ্চানন তর্করত্নঃ উত্তরখন্ড…… শ্রীকৃষ্ণ বলছে (ব্রাহ্মণ লেখক বলছে )………………
ভক্তরা বলে থাকেন যে গড়ুরপুরাণের
উত্তরখন্ডে শ্রীকৃষ্ণ শ্রাদ্ধের
বিধান দিয়েছেন,ভক্তরা একটু যুক্তি দিয়ে পড়লেই বুঝতে পারবেন যে কাল্পনিক
শ্রীকৃষ্ণের পিছনে সমস্ত কলকাঠি নেড়েছে লোভী ব্রাহ্মণ।
১।“যে স্হানে মৃত্যূ হয়,সে স্হানে শ্রাদ্ধ করলে তত্রত্য ভূমি দেবতা সন্তুষ্ট হন”।
২।“দ্বারে শ্রাদ্ধ করলে বাস্তু দেবতা তুষ্ট হন”।
৩।“চত্বরে শ্রাদ্ধ করলে ভূতাদি খেচরগন সন্তুষ্ট হয়”।
৪।“বিশ্রাম
স্হানে শ্রাদ্ধ করলে
পঞ্চভূত ও দশদিক
সন্তুষ্ট হয়”।
৫।“শ্মশানে
শ্রাদ্ধ করলে সাধকগন
তুষ্ট হন”।
৬।“চিতায়
শ্রাদ্ধ করলে প্রেত
স্বয়ং তৃপ্ত হয়’। @prasanta
মন্তব্যঃ--অর্থাৎ ব্রাহ্মণ
লেখকের অন্তরের ইচ্ছা হল উক্ত স্হানগুলির সর্বক্ষেত্রে তোমরা সারজীবন শ্রাদ্ধ করো।তবে
তো ব্রাহ্মণ সমাজ না খেটে রাজার হালে বসে খেতে পারবে।(১-৬
পর্যন্ত,অধ্যায় ৫,শ-৪৮-৫০)
শ্রাদ্ধের নামে
ব্রাহ্মণের ধান্দাবাজি দেখুন।সারাজীবন শ্রাদ্ধ করলেও
শ্রাদ্ধ শেষ হবে না,আর ব্রাহ্মণের সীমাহীন লোভ,লালসারও অবসান হবে না।
৭।“মৃত্যূস্হানে শ্রাদ্ধ
করে তারপর শব
শ্মশানে এনে চিতায়
শ্রাদ্ধ করবে”।(অধ্যায় ৫,শ-৫৫)
৮।“বিদেশে
মরুক,বাঘে খাক,জলে
ভেসে যাক………যে প্রকারে
মৃত্যূ হোক না
কেন ব্রাহ্মণ্যবাদীদের কল্পিত
শ্রীকৃষ্ণজী সব মূত্যূর
শ্রাদ্ধের বিধান দিয়েছে
বডি থাক বা
না থাক।(অধ্যায় ৫,শ্লোক ১০১-১০৮)খরিদ্দার ছাড়া চলবে
না,ছাড়লে
ব্রাহ্মণ বাছাদের চলবে কিভাবে?কেবল
এ ক্ষেত্রে ব্রাহ্মণ
ভিক্ষারীদের একটু বেশী
দিলেই চলবে।
৯।“প্রতিমাসের
মৃত্যূ তিথিতে মাসিক
শ্রাদ্ধ করতে হবে”।মাসিক শ্রাদ্ধ হলে ষোড়শ শ্রাদ্ধ পতিত থাকবে।(অধ্যায় ২৭,শ-২৯,৩০)
১০।“যাহাদিগের বৈতরনী(কালো
গর্ভ সম্পন্ন গাভী)প্রদান
করা হয়েছে তারা
গন্তবে পৌঁছাতে পারে”।(অধ্যায়৬,শ-১২৪)
১১।“যাহাদের বৈতরনী
প্রদান হয়নি তারা
ভয়ংকর জীব শঙ্কুল
নদীতে প্রানীদের দংশন
ভোগ করে”।(অধ্যায় ৫,শ-৬)ব্রাহ্মণকে একটি গাভী দান করলে আর চিন্তা নেই।তবে সবৎসল গাভী
হলে ভালো হয়।ব্রাহ্মণ দুধ খেতে খেত বাড়ী নিয়ে যাবে।
১২। “ষোড়শ
শ্রাদ্ধ যাহার জন্য
অনুষ্ঠিত হয় নাই,তাহার
অন্যান্য শতশত শ্রাদ্ধ
প্রদান করলে ও
প্রেতত্ব সুস্হির থাকে”।(২৭/৩০-৩১)তার মানে ষোড়শ শ্রাদ্ধ ছাড়া সব বেকার।অর্থাৎ ব্রাহ্মণ লেখকের
মত হল সন্তানকে তার মৃত পিতামাতার জন্য সর্বস্ব বিক্রি করে ষোড়শ শ্রাদ্ধ করা উচিত।
১৩।‘শ্রাদ্ধকাল
সমাগত দেখে পিতৃগন
হৃষ্ট থাকেন এবং
সবেগে শ্রাদ্ধস্হলে উপস্হিত
হয়ে যে সকল
ব্রাহ্মণ ভোজন করানো হয়
তাদের শরীরে আবিষ্ট
হয়ে ভোজন পূর্বক
নিজধামে গমন করেন”।(অধ্যায় ১১,শ-২৪,২৫)কী সুন্দর ধান্দবাজি ভাবুন।শ্রাদ্ধের
পূর্ব্বদিনে যে সকল ব্রাহ্মণকে নিমন্ত্রন করা হয় তাদের শরীরে পিতৃগণ আবিষ্ট হইয়া
ভোজন পূর্ব্বক নিজধামে গমন করে।(অধ্যায় ১১,শ-২৬)
১৪।“রামচন্দ্র
বনে পুষ্করতীর্থে,বাবার শ্রাদ্ধে
ব্রাহ্মণ ভোজন করালে
সীতা দেখেন রামের
পিতা,পিতামহ ও
প্রপিতামহ ব্রাহ্মণদের সাথে
ভোজন করছেন”।(অধ্যায় ১১,শ-৩২,৩৩)।শ্রাদ্ধের সমর্থনে
এই গাঁজাখুরি গল্প
ব্রাহ্মণরা বানিয়েছে।
১৫।(উত্তর খন্ড শ্লোক-২/৪)“অপুত্রকের গতি নাই,তাহার
স্বর্গ প্রাপ্তি হয় না”।অতএব যেকোন উপায়ে
পুত্র উৎপাদন করিবে।(অধ্যায় ১৪,শ-১৭,১৮ তেও একই কথা)
১৬।মন্তব্যঃ-পুত্র
নেই বলে শ্রাদ্ধ
বন্ধ করবে না,
তাহলে ব্রাহ্মণ
বাছাদের চলবে কি করে ?
এক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণ
বিধান দিয়েছেন-(২৬/২৩-২৪)“পত্নীই, পুত্রহীন
ব্যাক্তিদের শ্রাদ্ধ করবে।এক ভ্রাতা পুত্রবান
হলে সেই পুত্র অন্যান্য পিতা ভ্রাতাদের
শ্রাদ্ধ করবে”।শ্রাদ্ধ
করতেই হবে,না হলে
ব্রাহ্মণ খাবে কী?তাই
নয় কী?
১৭।“যাহার
প্রতিমাসবিহিত মাসিক শ্রাদ্ধ
হয় নাই,তাহার
উদ্দেশ্যে শতশত শ্রাদ্ধ
করলে ও প্রেতত্ব
থেকে মুক্তি নাই”।(অধ্যায় ২৭,শ-২৯,৩০)প্রতি মাসে শ্রাদ্ধ না করলে
ব্রাহ্মণরা বসেবসে খাবে কী ?
১৮।“সর্ব্ববিধ
শ্রাদ্ধ করিয়া তারপর বৃষোৎসর্গ
শ্রাদ্ধ করিবে অন্তত
ত্রয়োদশ বিপ্রকে ছত্র,ভূমি,স্বর্নাঙ্গুরি,রত্নভাজন,
আসন ও ভোজন
দ্রব্য প্রদান করিবে।প্রেতের হিতের নিমিত্ত
অন্ন,জলপূর্ন কুম্ভ,শয্যা,
ঘট………….প্রভৃতি
প্রদান করিবে”।(অধ্যায় ২৭,শ-৪৮,৪৯)গরীব,ভিক্ষারীকে বলা হয়নি কিন্ত,শুধুই ব্রাহ্মণকে ভোজন করাতে বলা হয়েছে।
১৯।“পুন্নাম
বা পুত নামক নরক
হইতে পিতাকে পরিত্রান
করে বলে ছেলে-পুত্র”।(অধ্যায় ২১,শ-৩১,৩২)অতএব
পুত্র জীবিত কালাবধি
পিতার শ্রাদ্ধ করিবে।তবে না ব্রাহ্মণ বলবান হবে।(একই শ্লোক-অধ্যায় ৩৪,শ-৯)
২০।“দ্বাদশ
মাসের দ্বাদশ মাসিক
শ্রাদ্ধ,একাদশ শ্রাদ্ধ,ষান্মাষিক
শ্রাদ্ধ,দ্বিতীয় ষান্মাষিক
ও সপিন্ডীকরন এই
ষোড়শ শ্রাদ্ধ করবে
এবং ব্রাহ্মণের পাদ
প্রক্ষালন পূর্ব্বক যথোপচারে
অর্ঘাদি দ্বারা পূজা
করিবে”।(অধ্যায়৩৫,শ-৩৫)
@prasanta
২১।“শ্রাদ্ধে
ঋকবেদধ্যায়ী ব্রাহ্মণকে শস্যপূর্ন
ভূমি ও যজুর্বেদধ্যায়ী ব্রাহ্মণকে পয়স্বিনী
গাভী প্রদান করিবে”।(অধ্যায় ৩৮,শ-৩৯)
২২।“পুত্রের
মরন হলে প্রতিবছর
তাহার একোদ্দিষ্ট শ্রাদ্ধ
করবে”।(অধ্যায় ৪৩,শ-২)কী নিষ্ঠুর রক্তচোষা বাদুড় ভাবুন।পুত্রের মৃত্যূর শোকে ভারাক্রান্ত পিতামাতাকে
এরা ছাড়ছে না।
২৩।‘শ্রাদ্ধের
শেষে ব্রাহ্মণকে যথাসর্বস্ব
দান করে বিসর্জ্জন
করিবে”।নিজের যা কিছু আছে সব
ব্রাহ্মণকে দিয়ে দাও।
২৪।“মৎস,হরিনমাংস,মেষমাংস,ছাগমাংস,বরাহমাংস…………………..প্রভৃতি
দ্বারা শ্রাদ্ধ করলে
পিতৃগন ক্রমশ একমাস
অধিক পরিতৃপ্ত থাকেন”।(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায় ৯৯,শ-৩৬,৩৭)
২৫।“প্রতিবছর
ত্রয়োদশিতে শ্রাদ্ধ করিবে
এবং ব্রাহ্মণকে দান
ধান করিবে তাহলে
শ্রাদ্ধকর্তা পুত্র-শ্রেষ্ঠত্ব-সৌভাগ্য-সমৃদ্ধি-রাজ্য-আরোগ্য-সমাজে
প্রাধান্য-বানিজ্যে লাভ…………………….আরো
অনেক ব্রাহ্মণ্য চালাকির
ফর্দ আছে”।
২৬।“শ্রাদ্ধ
করতেই হবে কারণ
প্রেতগন কেবল নিজকুলের
পীড়া উৎপাদন করে
না,ছিদ্র
পাইলেই অপরের ও
পীড়ন করে থাকে”।(অধ্যায় ২০,শ-১৫)ব্রাহ্মণ লেখক ভূত বিশেষজ্ঞ বটে।
২৭।“নরগন জ্ঞানত বা অজ্ঞানত
কিছু
পাপ
কর্ম
করে
সেই
পাপের বিশুদ্ধি নিমিত্ত
প্রায়শ্চিত্ত করা একান্ত কর্তব্য”।মরণ উন্মূখ মুমূর্ষ ব্যক্তির মৃত্যূর আগে লোভী ব্রাহ্মণের চরম ধান্দাবাজি হল
প্রায়শ্চিত্রবিধান।
২৮।“ব্রাহ্মণকে অন্নদান না করে নিজে
অন্নভোজন করলে পরজন্মে কাক হয়ে জন্মাতে হবে”।(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায় ২২৯,শ-২০)অর্থাৎ গরীব ভিক্ষারীকে নয় কবল ব্রাহ্মণকে সারাজীবন
অন্নদান করতে থাকো।
২৯।“মহামান্য ব্রাহ্মণের কাজে প্রতিবাদ করলে পরজন্মে
কচ্ছপ হয়ে জন্মাতে হবে”।(২/৮২ নং শ্লোক)
অর্থাৎ ব্রাহ্মণ যত খারাপ কাজ করুক প্রতিবাদ করবে
না।
৩০।“ব্রাহ্মণকে দান করা গরুর ঘাস কেটে খাওয়ালে সর্বপাপ
মুক্তি ঘটে”।(৫১/২৫ নং শ্লোক)অর্থাৎ ব্রাহ্মণকে গরু
দান করেও রেহাই নেই।তার আবার ঘাস কেটে খাওয়াতে হবে।
৩১।“মনুষ্যগন ভূতলে যে অন্ন বিতরন করে তৎদ্বারা প্রেতগন
তৃপ্ত হয়”।(১১/৬১ নং শ্লোক)অর্থাৎ সারাজীবন
অন্নদান সহ শ্রাদ্ধে ব্রাহ্মণ সহ সবাইকে ভুরিভোজ করাতে হবে।
৩২।উত্তরখন্ড ৫ম অধ্যায়,শ্লোক৮৭-৮৮-“যে নারী পতি সহিত
সহমৃতা হয়,মানুষের শরীরে যে সার্দ্ধ ত্রিকোটি লোম আছে,সেই লোম সংখ্যক বর্ষ সে
স্বর্গে বাস করে।সহমৃতা নারী পতিকে নরক থেকে উদ্ধার করে স্বর্গে একসাথে খেলা
করে।সহমৃতা নারী পিতৃকুল,মাতৃকুল ও শ্বশুরকুলকে পবিত্র করে।সহমৃতা না হলে নিজে
অপবিত্র থাকে এবং সবকুলকে অপবিত্র করে”।বিধবাকে পুড়িয়ে মারার কী জঘণ্য পরকল্পনা শ্রীকৃষ্ণ
তথা ব্রাহ্মণ লেখকের।
৩৩।ব্রহ্মা বলছে(৮১/৮২ শ্লোকে)–“গয়া তীর্থ ব্রহ্মলোকপ্রদ।এই স্হানে সমস্ত পূণ্য
উপার্জিত হয়”।
৩৪।ব্রহ্মা বলছে(৮২/১৬ নং শ্লোক)-“গয়াতীর্থে
শ্রাদ্ধ করলে সমস্ত
পাপ নষ্ট হয়
ও স্বর্গে বাস হয়”।
৩৫। ব্রহ্মা বলছে (৮০/৪০ শ্লোক)-“পঞ্চক্রোশ পরিমিত গয়া ক্ষেত্রে এমন এক বিন্দু
নাই;যেখানে তীর্থ নাই,অর্থৎ গয়াতে সকল স্হানে পিন্ড দান করিলে পিতৃগণ অক্ষয় ফল
প্রাপ্ত হইয়া ব্রহ্মলোকে গমন করেন”।
৩৬।ব্রহ্মা বলছে-“বহু পুত্র
উৎপন্ন করিবে।তাদের মধ্যে কেউ না কেউ গয়াধামে যেতে পারবে।তখন বংশের সবাই
ব্রহ্মলোকের বাসিন্দা হতে পারবে”।
৩৭।ব্রহ্মা বলছে (৮২/১৮)-“মানবগন গয়াতীর্থে পিতৃলোকের পিন্ডদান করিলে যেরুপ পূণ্য
লাভ করে তা আমি শতকোটি বছরেও বলে শেষ করিতে পারিব না”
৩৮।গঃপুঃপৃঃ১৮৪(৮২,১-২)-“মানবগন গয়াতে যজ্ঞ,শ্রাদ্ধ ও পিন্ডদান এবং স্নানাদি
করিলে সর্বদা স্বর্গলোকে ও ব্রহ্মলোকে গমন করে,কদাচ তাহার নরকে গতি হয় না”।
৩৯।ব্রহ্মাজী বলছে-“যে মানব গয়াতীর্থে গমন করে,সে তৎক্ষনাত পিতৃঋন থেকে মুক্ত হয়”।
৪০।ব্রহ্মাজী আরো বলছে-“পর্বস্থ শিব মূর্তি দর্শন করিলে পিতৃঋন হইতে মূক্ত হয়”।
৪১।ব্রহ্মজী বলছে(৮৩/৮১)-“ধেনুকারণ্যে পিতৃশ্রাদ্ধ করিলে পিতৃলোকের ব্রহ্মলোক
প্রাপ্তি হয়”। @prasanta
৪২।ব্রহ্মাজী বলছে(৮৩/৮২)-“মানবগন ঐন্দ্র তীর্থে,নর তীর্থে,বাসব তীর্থে,রাম
তীর্থে,বৈষ্ণব তীর্থে ও মহানদীতে পিতৃলোকের শ্রাদ্ধ করেলে পিতৃলোক ব্রহ্মলোকে গমন
করে”।
৪৩।ব্রহ্মাজী বলছে(৮৩/৩৩)-“গায়ত্রতীর্থ,সাবিত্রী তীর্থ,সারস্বত তীর্থে
স্নান,তর্পন ও শ্রাদ্ধ করিলে একাধিক শত পুরুষ পর্যন্ত ব্রহ্মলোকে গমন করে”।
৪৪।ব্রহ্মাজী আরো বলেন(৮৩/৩৪)-“ধর্মযুপ তীর্থে স্নানাদি করিলে নরগন পিতৃঋন হইতে
মুক্ত হয়”।
স্নান করলেই যদি পিতৃঋন মুক্তি ঘটে তবে শ্রাদ্ধের কি দরকার
?
৪৫।বিভিন্ন
তীর্থক্ষেত্রে শ্রাদ্ধের ফলাফল
বর্ননা করা হয়েছে।স্বর্গলোভীদের বিভিন্ন স্বর্গে
পাঠানোর বন্দবস্ত আছে।
৪৬। “সব শ্রাদ্ধ
বিফল
যদি
ব্রাহ্মণকে দান ও ভোজন না করানো হয়”।
৪৭।“শ্রাদ্ধের আগের দিন
গুন সম্পন্ন ব্রাহ্মণকে
অন্য ব্রাহ্মণ দ্বারা
নিমন্ত্রন করে শ্রাদ্ধ
নিয়োগ করবে”।(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায়
৯৯,শ-৭)
৪৮।“বৃষোৎস্বর্গ
অপেক্ষা আর কোন
ও স্বর্গসাধন কর্ম
নাই”।(অধ্যায় ৭,শ-১২৯)
৪৯।“যখন
অধিকারী নাই,অধিকারী
সম্বন্ধ কোন নিশ্চয়
ও নাই তখন
জীবিত নর স্বয়ংই
নিজের ভাবী শ্রাদ্ধ
করিবে”।(উত্তর খন্ড,অধ্যায়-)
৫০।“মৃত
ব্যাক্তির যাহা প্রিয় শ্রাদ্ধের
সময় সেই সেই
দ্রব্য ব্রাহ্মণকে দান
করবে”।(উঃখন্ড,অধ্যায়
২৪,শ-৩৮,৩৯)
৫১।“শ্রাদ্ধের সময় প্রেতের
উদ্দেশে আচ্ছাদন,উপাধানাদি(বালিশ)সহ
শয্যা ও স্বর্ন
নির্মিত বিষ্ণু মূর্তি
ব্রাহ্মণকে দান করলে
প্রতত্ব থেকে মুক্ত
হয়ে দেবগনের সাথে
ক্রীড়া করতে পারে”।(উঃখন্ড,অধ্যায় ৩১,শ-২৩,২৪)
৫২।“প্রেতের
ক্ষুধা নিবারনার্থে বহু
ব্রাহ্মণকে ভোজন করাবে”।(অধ্যায় ৬,শ-৪৭,অধ্যায় ১১)
ব্রাহ্মণদের পেটপূরনের জন্য,ব্রাহ্মণ সুরক্ষ্যার জন্য রচিত প্রতিটি ব্রাহ্মণ্যবাদী গ্রন্হে অজস্র স্ববিরোধিতা পাগলের প্রলাপের মত জ্বলজ্বল করছে।
৫৩।উঃ খন্ডঃ পৃঃ৪৯ শ্রীকৃষ্ণজী বলছেন-“শ্বেতবর্নের বৃষ ব্রাহ্মণ,লোহিত বর্নের বৃষ ক্ষত্রিয়,পীত বর্নের বৃষ বৈশ্য এবং কালো বর্নের বৃষ শূদ্র”।বৃষোৎস্বর্গ শ্রাদ্ধে অবশ্যই বর্ন অনুযায়ী ষাঁড় লাগবে।(অধ্যায় ৭,শ—১৯,২০)
৫৪।শ্রীকৃষ্ণজী প্রেতের স্পেশাল খাদ্য সম্পর্কে বলছেন “শ্লেষ্মা,মূত্র,রেচক,মল ও উচ্ছিষ্ট পক্কান্ন দ্বারা প্রেতের ভোজন হয়ে থাকে।(অধ্যায় ২২,শ্লোক-৪৭)যে সকল গৃহ শৌচ বর্জিত ও সর্বপ্রকার উপকরণ রহিত অথচ মলিন সেই সকল স্হানে প্রেতগনের ভোজন ক্রিয়া সম্পন্ন হয়”।
৫৫।নাগদংশনে কারুর মৃত্যূ হলে এক ভরি স্বর্নের নাগমূর্তি ও গো-প্রতিমা তৈরী করে ব্রাহ্মণকে যথাবিধি দান করলেই মুক্তি হবে।(অধ্যায় ৫ শ্লোক ১৩০)
৫৬।প্রায়শ্চিত্তে অসমর্থ হলে গো-হিরণ্যাদি ব্রাহ্মণকে দান করলেই হবে।(অধ্যায় ৫,শ-১৫৩)
৫৭।পুত্র,পত্নী,দৌহিত্র,পিতা,কন্যা যেই হউক একজনে অবশ্যই বৃষোৎস্বর্গ শ্রাদ্ধ করিবে।(অধ্যায় ৬,শ-৪২)(অধ্যায় ১৪,শ-১৬,১৭)
৫৮।প্রেতের ক্ষুধা নিবারনার্থে বহু ব্রাহ্মণকে ভোজন করাবে।(অধ্যায় ৬,শ-৪৭)
৫৯।মনুষ্যগনের অন্তকালে হিতের জন্য বৈতরনী দান করা আবশ্যক।(অধ্যায় ৬,শ—১২৫)
৬০।যাহার উদ্দেশ্যে একাদশ দিবসে বৃষোৎসর্গ না হয় তাহার প্রেতত্ব সুনিশ্চল থাকে।(অধ্যায় ৭,শ—১৪)
৬১।বষোৎসর্গ না করিলে সব কিছু বিফল।(অধ্যায়-১৪,শ-৩)(অধ্যায় ৭,শ-১২৯)
৬২।প্রেতের মুক্তির উপায় না করিলে সে জন্ম জন্মে
অপুত্রক,দরিদ্র,ব্যাধিপীড়িত,বৃত্তিহীন ও দৈন্যাবস্হা প্রাপ্ত হয় এবং পশুযোনী
প্রাপ্ত হয়।(অধ্যায় ২১,শ-১৪,১৫)
৬৩।যে ব্যক্তি অশ্বমেধাদি
মহাযজ্ঞ,বিবিধ দান,মঠ প্রতিষ্ঠা, ব্রাহ্মণ কন্যার বিবাহ কার্য সম্পাদন করবে তার
প্রেতত্ব প্রাপ্তি হবে না।(অধ্যায় ২২,শ-৫৭,৫৮)
৬৪।প্রতিবছর পিতামাতার
শ্রাদ্ধ করিলে সে ব্যক্তি কখনো পাপে লিপ্ত হয় না।(অধ্যায় ২৫,শ—৩৬)
৬৫।শূদ্র ও অনুপনীত
দ্বিজাতি স্ত্রীদিগের মৌন শ্রাদ্ধ কর্তব্য।এরা মন্ত্রপাঠ না করিয়া শ্রাদ্ধ করিলেই
সিদ্ধ হইবে।
অধ্যায় ৪৩,শ্লোক-৭
৬৬।পুত্রের মৃত্যূ হইলে প্রতিবর্ষে পার্ব্বনশ্রাদ্ধ করিবে।(অধ্যায়-৪৩,শ-২) @prasanta
৬৭।এককালে একের অধিক
ব্যক্তির মৃত্যূ হইলে প্রত্যেকের কিন্তু পৃথক পৃথক শ্রাদ্ধ করিতে হইবে।(অধ্যায়-৪৩,শ-৮)
৬৮।প্রায়শ্চিত্তাথী
ব্যক্তিকে দশদ্রব্য দান করতে হবে যথা-গো,ভূমি,তিল,স্বর্ন,ঘৃ্ত,বস্ত্র,ধান্য,গুড়,রজত
ও লবন। (অধ্যায় ৫,শ-৪)
৬৯।যে প্রেতের উদ্দেশ্যে একাদশাহে বৃষোৎসর্গ না হয়,তাহার উদ্দেশ্যে শত শত শ্রাদ্ধ
করিলেও প্রেতত্ব বিমুক্তি হয় না।(অধ্যায় ৬,শ-৩৯)
৭০।মৃতের উদ্দেশ্যে শয্যা,ধেনু প্রভৃতি প্রদান করিতে হয়।(অধ্যায় ৬,শ—৪৬)
৭০।বৃষোৎসর্গ ব্যাতিত ভূতলে প্রেতহিতকর আর কোনও কার্য নাই।(অধ্যায় ৬,শ—৪৫)
৭১।ষোড়শ শ্রাদ্ধ যাহার জন্য অনুষ্ঠিত হয় নাই তাহার অন্যান্য শত শত শ্রাদ্ধ করিলেও প্রেত সুস্হির থাকে অর্থাৎপ্রেতেরমুক্তি হয় না।(অধ্যায় ১০,শ—৪৮,৪৯)
৭২।পুত্রাদি বান্ধবগনসহ যদি গয়াধামে শ্রাদ্ধ করে তবে তাহাদিগের সহিত পিতৃগন উদ্ধার পাইয়া ব্রহ্মলোকে বাস করিতে থাকেন।(অধ্যায় ১১,শ—৫৪)
৭৩।অভাবপক্ষে শাক অথবা ফল দ্বারাও শ্রাদ্ধ করা কর্তব্য।দেবলোক অপেক্ষা পিতৃলোকের পূজা অগ্রে করিবে।(অধ্যায় ১১,শ-৫৬)
৭৪।মরনের পর যাহার একাদশাহে বষোৎসর্গ না হয়,শত শত শ্রাদ্ধ করিলেও তাহার প্রেতের মুক্তি হয় না।(অধ্যায় ১৪,শ-৮)
৭৫।সূস্হচিত্ত ব্যক্তির এক গোদান,অসুস্হের শত ও অজ্ঞানীর সহস্র গোদানের এবং মৃতের এক লক্ষ গোদানের সমান।(অধ্যায় ১৫,শ-১,২) এই ধান্দাবাজির অর্থ বুঝলেন কী ? অসুস্হ ব্যক্তির মতিগতি পরবর্তন হতে পারে তাই সুস্হ থাকতেই ব্রাহ্মণকে সব দিয়ে দিন।
৭৬।হীনজাতির সহিত বন্ধুতা-বন্ধন এবং হীন কর্মে অনুরাগ,অধর্মে মতি সব প্রেতদোষে উৎপন্ন হয়।(অধ্যায় ২০,শ—২৮)
৭৭।পাঁচ বছর বয়সের অধিক বালকের মরণ হলে সপিন্ডীকরণ ছাড়া বৃষোৎসর্গাদি করিবে ও শ্রাদ্ধদিবসে ব্রাহ্মণ ভোজন এবং যথাশক্তি মহাদানাদি করিবে।(অধ্যায় ২৫,শ—১৮)
৭৮।পুত্র পিতার উদ্দেশ্যে বিবিধ ব্যঞ্জন ও ভোজদ্রব্য দান করিলে পিতা যখন যমলোকে গমন করে তাহার সমীপে সে সব দ্রব্য উপস্হিত হয়।(অধ্যায় ৩৪,শ-৮)
৭৯।ষোড়শ শ্রাদ্ধকালে ষোড়শ ব্রাহ্মণের প্রত্যেককে এক একটি অর্ঘ প্রদান করিবে।(অধ্যায় ৩৭,শ-১১)
৮০।একটি একবর্ন বৃষ ও একটি বৎসরীকে স্নান করাইয়া অলঙ্কারে ভূষিত করাইয়া ব্রাহ্মণকে দান করিবে তাহলে প্রেতের মুক্তি হবে।(অধ্যায় ৩৯,শ-১০)
৮১।প্রতিবছর একোদ্দিষ্টাবিধানে শ্রাদ্ধ করিলে পাপকর্মা জনগন স্বর্গলাভ করিতে পারে।(অধ্যায় ৪২,শ-২১,২২)
৮২।যদি নারী পুত্র,মাতা,পিতা,পরিত্যাগ করিয়া স্বামীর অনুগমন করে,তাহা হইলে সেই নারী চিরকাল সুখভোগ করিতে থাকে।পতীর অনুগামিনী নারী স্বর্গলোকে সার্দ্ধোত্রিকোটি বৎসর বাস করে।মহাভোগসম্পন্ন কুলে জন্মগ্রহন করে এবং পতির সহিত মহাপ্রীতি অনুভব করে।(অধ্যায় ২৬,শ-৫৩,৫৪,৫৫)
৮৩।যে স্ত্রী পুত্রপৌত্রাদি পরিত্যগ করিয়া পতির সহিত চিতারোহন করে,সেই স্ত্রী ও পতি উভয়ে দিব্য স্ত্রীযানে পরিবৃত হইয়া স্বর্গেগমন করে।সর্ব্ববিধ পাপাচ্চারণ কিংবা স্বামীদ্রোহাচারন করিলেও স্বামীর সহিত চিতারোহন করিলে সমস্ত পাপ নাশ হয় এবং স্বর্গবাস প্রাপ্ত হয়।(অধ্যায়
৩৭,শ-৪০,৪১)
৮৪।প্রেতের উদ্দেশ্যে শক্তি অনুসারে গো,ভূমি,স্বর্ন দান করিতে
হয়।(অধ্যায় ৪২,শ-১৮)
৮৫।যিনি জীবদ্দশায় ভূমিদান করেন,মরণের পর
আদিত্য,বরুন,বিষ্ণু,ব্রহ্মা,সো্ম,হুতাশন ভগবান শূলপানি ইঁহারা তাকে অভিনন্দন
করিয়া থাকেন।ভূমি দানের তল্য কোন দান নেই।(অধ্যায়
৪০,শ-১,২)
৮৬।পতিপুত্রবতী
নারীর মৃত্যূ হলে বৃষোৎসর্গ না করিয়া পয়স্বিনী গাভী দান করিবে।(অধ্যায়
৭,শ-১৩০)
অগ্নিপরানে সর্বপাপের প্রায়শ্চিত্যবিধান ও ব্রাহ্মণ্য
ধান্দাবাজি আছে-(১৫৭-১৫৮),১৬৯,১৭২,১৭৩-১৭৪ অধ্যায়।
৮৭।শয্যাদান করলে বিমানারোহনে স্বর্গে যাবে।(অধ্যয় ১৮,শ-৩)
@prasanta
৮৮।বিবাহাদি শুভকাজে সদক্ষিন শ্রাদ্ধ করিবে।যাকে নান্দিমুখ
বলে।(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায় ৯৯,শ-৩০)
৮৯।প্রতিবৎসর মঘাত্রয়োদশিতে শ্রাদ্ধ করিবে।(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায়
৯৯,শ-৩৮)
৯০।বিধিপূর্ব্বক পিতৃগনের শ্রাদ্ধক্রিয়া সাধন করিলে
শ্রাদ্ধকর্তা পুত্র,শ্রেষ্ঠত্ব,সৌভাগ্য,সমৃদ্ধি,রাজ্য,আরোগ্য,স্ব-সমাজে
প্রাধান্য,বানিজ্যে লাভ এবং বিবিধ শুভলক্ষন প্রাপ্ত হয়।(পূর্ব্বখন্ড,অধ্যায়
৯৯,শ-৩৯,৪০)
৯১।শ্রাদ্ধ্যের শেষে শ্রাদ্ধকর্তা নিজেই ব্রাহ্মণগনকে পরিবেশন পূর্ব্বক ভোজন
করাবেন।(উঃখন্ড,অধ্যায় ১১,শ-৩৯)
৯২।শ্রাদ্ধ দিবসে ব্রাহ্মণভোজন ও যথাশক্তি মহাদানাদি করিবে।(অধ্যায়
২৫,শ-২০)
৯৩।প্রেতের শুভাকাঙ্খী ব্যক্তি একদশাহে ত্রয়োদশ দ্রব্য দান
করিবে।আসন,ভোজনপত্র,ভোজ্যপত্র,অন্ন,অঙ্গুরী,মুদ্রা,বস্ত্র, ছত্র,অশ্ব,হস্তী,মহিষী........ইত্যাদি
ব্রাহ্মণকে দান করিবে।(উঃখন্ড,অধ্যায় ৩১,শ-১৫,১৬)
শ্রীকৃষ্ণের বানী
মেনে যদি প্রতাত্মাকে
তৃপ্তি করাতে হয়
তাহলে অতিথি ব্রাহ্মণের
ভোজনে প্রেতের খাদ্য
দ্রব্যগুলি না
দিলে অশাস্ত্রীয়
কাজ হবে না
কী?একটু ভাবুন।দেবদেবী এবং মৃত পিতা-মাতার প্রতাত্মা ব্রাহ্মণের মুখ দিয়ে খায়।শাস্ত্র
মেনে কাজ করতে হলে(গঃপুঃ অধ্যায় ২২,শ-৪৭)অনুযায়ী ব্রাহ্মণকে প্রেতের স্পেশাল
খাদ্যগুলি তো দিতেই হবে।
উক্ত প্রেতের স্পেশাল খাদ্যগুলি অতিথি ব্রাহ্মণরা খাবেন কী?শ্লেষ্মা,মূত্র,রেচক,মল ইত্যাদি।ব্রাহ্মণের অসৎ
উদ্দেশ্য
বোঝা গেল
কী?মৃত
ব্যক্তিকে যদি সম্মান জানাতে
হয় তবে অনাত্মীয়
ব্রাহ্মণকে দিয়ে কেন?নিজোরাই শ্রদ্ধা জানান।শ্রাদ্ধ নয়,শ্রদ্ধা
অনুষ্ঠান করুন, নাপিত-ব্রাহ্মণ নয়
আত্মীয় বন্ধু-বান্ধবকে সঙ্গে
নিয়ে।
আসল কথা
হল তোমার যা
কিছু আছে যথা
সর্বস্ব সব ব্রাহ্মণ
কে দিয়ে দাও।এমন জঘণ্য মানুষ ঠকানো ষড়যন্ত্র কোন ধর্মে নেই।এমন নির্লজ্জ
ভিক্ষারী সম্প্রদায় পৃথিবীর
কোনো ধর্মে নেই।মানুষ কবে বুঝবে
স্বর্গ,নরক সব এই
পৃথিবীতে।আমার মনে
হয় যারা ব্রাহ্মণ
ডেকে মৃত বাবা,
মাকে স্বর্গে পঠায়
তারা পৃথিবীর সেরা
বোকা।স্বর্গ বলে
যদি কিছু থাকতো
আর তা ব্রাহ্মণের
জানা থাকতো তাহলে
ব্রাহ্মণরা কাউকে বলতো
না,নিজেরা
গিয়ে বসে থাকতো ।শ্রাদ্ধে লাভ একমাত্র
ব্রাহ্মণের আর কারো
নয়।
এখানে কেবলমাত্র গড়ুরপুরাণে ব্রাহ্মণের নির্লজ্জ
ভিক্ষারীপনার নমূনা দেখানো হল।বাকী সব পুরাণ(স্কন্দপুরাণ,লিঙ্গপুরাণ,মৎস্যপুরাণ,নারদপুরাণ,বামনপুরাণ,ব্রহ্মপুরাণ,ব্রহ্মান্ডপুরাণ,মার্কেন্ডীয়পুরাণ,ভাগবতপুরাণ,পদ্মপুরণ,বায়ুপুরাণ,বিষ্ণুপুরাণ,বরাহপুরাণ,কূর্মপুরাণ,ভবিষ্যপুরাণ)গুলিতে
এমন ব্রাহ্মণ্য ভিক্ষারীপনার জলন্ত উদারণ আছে।
সমস্ত পুরাণে শতশত অলৌকিক গালগল্পের মাধ্যমে দেখানো হয়েছে
ব্রাহ্মণই হিরো,ব্রাহ্মণই দেবতাস্বরুপ।ব্রাহ্মণের কথামত না চললে বা ব্রাহ্মণের
অবাধ্য হলে,যত পাপ আর নরক বাস।ব্রাহ্মণের কথামত
প্রায়শ্চিত্য এবং শ্রাদ্ধের মাধ্যমে ব্রাহ্মণকে ভরণপোষন না করলে ব্রাহ্মণের অভিশাপ
ও প্রেতাত্মার অত্যাচারে গৃহস্হের সারা শরীর পাপে ভরে যাবে,বাঁচা মুশকিল হবে এবং
সংসারে অভাব,রোগ,শোক লেগেই থাকবে এবং শেষে সর্বস্ব হারিয়ে পথের ভিক্ষারী হবে আর মৃতের প্রতাত্মা কষ্ট পেতে থাকবে,বিভৎস্য সব নরকে পচতে থাকবে,জন্মান্তরে কীট-পতঙ্গ,কৃমি,পশুপাখী
হয়ে জন্মাবে,মানবজন্ম হবে না।আর ব্রাহ্মণের নির্দেশমত
অশৌচপালন,প্রায়শ্চিত্য,শ্রাদ্ধ,দান-মহাদান দ্বারা ব্রাহ্মণের থলি ভরাতে পারলে ব্রাহ্মণ
ও প্রেতাত্মার আশীর্বাদে গৃহীর সংসার সুখ,শান্তি,সমৃদ্ধি ও ঐশর্য্যে কানায় কানায়
ভরে যাবে।এমন হাস্যকর ছেলেমানুষী এবং শয়তানি কোন ধর্মে নেই।যে ব্যক্তি সংসারের
অভাবের জ্বালায় আত্মহত্যা করলো,মৃত্যূর পর তার আশীর্বাদে নাকি সংসারের সব অভাব
মিঠে যাবে।মানুষকে এমন বোকা
বানানো,টুপি পোরানো রক্তচোষা বাদুড় সম্প্রদায় পৃথিবীর কোন ধর্মে নেই।।হাজার হাজার
দেবদেবী বানিয়ে চলছে
ব্রাহ্মণ শ্রেনীর লুন্ঠন
কার্য।মানুষ কবে
বুঝবে মানুষের হাতে
তৈরী দেবদেবীরা ইট,কাঠ,পাথরের
সব জড় পদার্থ।তারা কিছুই নিতে
পারে না,কিছুই
দিতে ও পারে
না।কেবল ব্রাহ্মণ
সম্প্রদায় বংশ পরমপরায়
না খেটে বসে
খাবার জন্য এমন
ফন্দি এঁটেছে।হিন্দুধর্মের
স্বার্থে ব্রাহ্মণ সেবা বন্ধ করুন।
মন্তব্যঃব্যক্তিগত-@Prasanta-kumar-Mondal
No comments:
Post a Comment