শ্রাদ্ধ কী ও কেন ?…P.K. R.Mondal.
শ্রাদ্ধ কী ও কেন ?…P.K.Mondal.
হিদু শাস্ত্র অনুযায়ী পিতৃপুরুষের আত্মার শান্তির উদ্দেশ্যে এবং তাদের আশীর্বাদ কামনায় ব্রাহ্মণকে দান-ধ্যান ও অতিথিভোজন অনুষ্ঠান হলো-শ্রাদ্ধ ।সাধারনত মৃত ব্যাক্তির সন্তান কিংবা আত্মীয়-স্বজনরা এ অনুষ্ঠান পালন করে থাকে।অবশ্য ব্যাক্তি নিজে ও মৃত্যূর পূর্বে এ কাজ করে যেতে পারে।মৃত্যূর আগে করো আর পরে করো শ্রাদ্ধ করতেই হবে না হলে অলস,কর্মবিমুখ ব্রাহ্মণ বাছাদের চলবে কেমন করে।
শ্রাদ্ধের প্রকারভেদ-প্রধানত শ্রাদ্ধ তিন প্রকার-১।আদ্যশ্রাদ্ধ ২।আভ্যুদয়িক শ্রাদ্ধ বা বৃদ্ধিশ্রাদ্ধ ৩।সপিন্ডীকরন শ্রাদ্ধ।
আদ্যশ্রাদ্ধ-অশৌচান্তে মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে এ শ্রাদ্ধ করা হয় ।
বৃদ্ধিশ্রাদ্ধ-উপনয়ন,বিবাহ ইত্যাদি শুভকাজের আগে পিতৃপুরুষের আশীর্বাদ কামনায় যে শ্রাদ্ধ করা হয় তাকে বৃদ্ধিশ্রাদ্ধ বলে।
সপিন্ডীকরন-মৃত্যূর এক বছর পর এই শ্রাদ্ধ করা হয়।এ ছাড়া ও আরো কিছু শ্রাদ্ধ আছে যেমন পার্বন শ্রাদ্ধ। যেমন মহালয়া এবং বিশেষ তিথিতে এই শ্রাদ্ধ করা হয়।
শ্রাদ্ধ বিষয়ে শূলপানির শ্রাদ্ধবিবেক এবং আচার্য রঘুনন্দনের শ্রাদ্ধতত্ত্ব বঙ্গদেশে অতি প্রামান্য গ্রন্থরুপে বিবেচিত হয়।
পুরানগুলির প্রায় প্রতিটি স্বর্গ,নরক,প্রায়শ্চিত্ত,শ্রাদ্ধ প্রভৃতি বিধানে ঠাসা।অসংখ্য অলীক কল্পকাহিনীর মাধ্যমে স্বর্গের লোভ আর নরকের ভয় দেখিয়ে ব্রাহ্মণ্যশ্রেনী প্রায় সমস্ত পুরাণে প্রায়শ্চিত্ত এবং শ্রাদ্ধের হাস্যকর বিধান দিয়েছে।
মার্কন্ডেয় পুরানে বলা হয়েছে-“পিতৃগন শ্রাদ্ধে তুষ্ট হলে স্বাস্হ্য,ধন,জ্ঞান দীর্ঘায়ু এবং পরিশেষে উত্তর পুরুষকে স্বর্গ ও মোক্ষ প্রদান করেন”।বেঁচে থাকতে যে মানুষ কিছুই করতে পারে নি,মৃত্যূর পর সেই
মানুষ নাকি সব করবে ব্রাহ্মণের কথায়।অবশ্য ব্রাহ্মণকে দান-ধ্যানে সন্তুষ্ট করতে
পারলে।এমন হাস্যকর ধান্দবাজি পৃথিবীতে বিরল।
ব্রাহ্মণ পুরোহিত শ্রাদ্ধে আপনাকে দিয়ে যে
মন্ত্রপাঠ করায় সে মন্ত্রের অর্থ জানেন কী ? সমস্ত
শাস্ত্রগ্রন্থে এরা মানুষকে জাতের নামে হীন,নীচ প্রতিপন্ন করেছে,শ্রাদ্ধকর্মে ও
তার ব্যাতিক্রম হয় নি।শ্রাদ্ধের মন্ত্রের অর্থ না জেনে ব্রাহ্মণের কথায় বোকা যজমান
কেমন নিজেকে এবং মৃত পিতা ও মাতাকে গালাগালি করে দেখুন।
“পাপহম পাপকর্মাহম
পাপাত্মা পাপসম্ভবা
ত্রাহিমাম কৃপাদেবা স্মরণাগতা বাৎসল্য”
অর্থ হল= আমি পাপী, আমি পাপ
কর্মের ফল,আমার আত্মা পাপী,আমার দ্বারা পাপই সম্ভব,হে দেব কৃপা করে স্মরণাগতকে আশ্রয় দিন।আপনি কেন পাপী ? কোন পাপ কাজ আপনি
করেছেন ? আপনার পিতা-মাতার পাপকর্মের ফলে কী আপনার উৎপত্তি ? আপনি যদি কাল্পনিক আত্মায়
বিশ্বাস করেন,সে আত্মা পাপী হল কিভাবে ? আপনার থেকে কী সব পাপই উৎপন্ন হবে ?
শাস্ত্র অনুযায়ী দেবদেবী ব্রাহ্মণের মুখ দিয়ে খায়,ব্রাহ্মণের মুখ দিয়ে কথা বলে।সাধারন মানুষ ডাকলে আসবে না, খাবে না্,কথা ও বলবে না।আবার শ্রাদ্ধ করলে পিতৃপুরুষগন ব্রাহ্মণের কথায় ওঠাবসা করে।ব্রাহ্মণের কথায় তারা আসবে এবং ব্রাহ্মণের কথায় তারা উত্তর পুরষদের প্রচুর দান করবে।মানুষের এমন অন্ধবিশ্বাস এবং এমন নির্লজ্জ পুরোহিত তন্ত্র পৃথিবীর কোনো ধর্মে নেই।
ব্রাহ্মণদের সৃষ্ট অসংখ্য দেবদেবী ব্রাহ্মণের কথায় সাড়া দেয়,কেবল ব্রাহ্মণের সাথে কথা বলে,ব্রাহ্মণ খাদ্য চিবিয়ে দিলে তবে খায় এবং ব্রাহ্মণের কথায় যজমানকে সবকিছু দান করে।বিনিময়ে ব্রাহ্মণ যজমানের দেত্তয়া সামান্য কিছু নিয়ে সন্তুষ্ঠ হয়।এমন মহান হৃদয় ভারতীয় ব্রাহ্মন পুরোহিতদের।নিজের জন্য তবু দেবতাদের কাছে এরা কিছুই চায় না।বোকা যজমানদের এমন বুলি শিখিয়েছে ব্রাহ্মন
পুরোহিত।বোকা যজমানরা জানে না যে,ব্রাহ্মণের তৈরী জড় পদার্থের পুতুল দেবদেবী শুধুই
তাদেরকে ঠকানোর জন্য।যজমানরা কি কোনো দিন ব্রাহ্মণ পুরোহিতকে জিজ্ঞাসা করেছেন ?যে আপনারা শুধু আমাদের জন্য দেবদেবীর কাছে প্রার্থনা করেন কেন ? আর আমাদের দেওয়া অল্প সম্পদে সন্তুষ্ট হন কেন ? দেবদেবীর কাছে নিজেরা চেয়ে নেন না কেন ? দেবদেবীর কাছে চাইলে যদি সব পাওয়া যায় তাহলে তো আর আপনাদের অভাব থাকবে না।এমন সরল প্রশ্নটি যজমানরা কেন করেন না ? বাবা,মায়ের মৃত্যূর পর তাঁদের আত্মা-প্রেতাত্মা ও ব্রাহ্মনের কথায় নাকি উঠবোস করেন,এমন দাবি ব্রাহ্মণ পুরোহিতদের।দেবদেবীরা যেমন ব্রাহ্মণের উচ্ছিষ্ট খায় আত্মা-প্রেতাত্মারা ও নাকি
ব্রাহ্মণের উচ্ছিষ্ট খেয়ে ধন্য হয়।ভূ-দেবতা সেজে এরা জীবিত মানুষকে উচ্ছিষ্ট
খাইয়েছে আর মৃত্যূর পর তার প্রেতাত্মাকেও উচ্ছিষ্ট খাওয়ায়।কেন খাবে না ? সমস্ত
দেবদেবী যদি ব্রাহ্মণ পুরোহিতের চিবিয়ে দেওয়া উচ্ছিষ্ট খেয়ে ধন্য হয়,মানুষ খাবে না
কেন ? এমন জঘণ্য বিশ্বাস হিন্দুদের।
সারা জীবন বাড়ীতে এসে হাজর বাজর মন্ত্র আউড়ে যে ব্রাহ্মণ দেবদেবীর কাছ থেকে একটা পয়সা আদায় করে দিতে পারেনি,সেই বাড়ীর ছেলে আবার ঐ ব্রাহ্মন পুরোহিতের কাছে ছুটছে মৃত বাবা/মাকে স্বর্গে পাঠানোর জন্য।এর থেকে হাস্যকর আর কী হতে পারে।বোকা যজমানারা আর কবে বুঝবে এসব দেবদেবী কাল্পনিক আর কর্মফল,আত্মা,প্রেতাত্মা,জন্মান্তরবা্দ,স্বর্গ,নরক সব ব্রাহ্মণ পুরোহিতের ধানদাবাজি।শ্রাদ্ধে ব্রাহ্মণ পুরোহিতের মন্ত্রবলে মৃতের পূর্বপুরষরা দলে দলে আসবে আর প্রচুর ধনসম্পদ দান করবে মৃতের সন্তানদের।এমন বিশ্বাস কী পৃথিবীর কোন ও সভ্য মানুষ করে ? এমন অলৌকিক ক্ষমতা ব্রাহ্মণের থাকলে তারা কি সমস্ত ধর্মশাস্ত্র জুড়ে ভিক্ষারীর মতো দাও দাও করতো ? আসল কথা হল ধর্মশাস্ত্রগ্রন্থ গুলি ভালো করে পড়তে হবে এবং মানুষকে জানাতে হবে তাহলে শাস্ত্রগ্রন্থগুলি ও ব্রাহ্মণের অসৎ উদ্দেশ্য মানুষ বুঝতে পারবে।
আসল কথা হলো দেবদেবী যেমন ব্রাহ্মণশ্রেনীর স্বার্থে বানানো পুতুল তেমনি মৃত্যূর পর”পূর্বপুরুষ”এর ধারনাও ব্রাহ্মণশ্রেনীর সৃষ্টি।সাধারন সহজ সরল মানুষদের ঠকানোর জন্য্ এবং তাদের সম্পদ হরন করার জন্যই এসব সৃষ্টি করা হয়েছে।ঈশ্বর বলে কেউ থাকলে সবার ডাকে সাড়া দিতো শুধু ব্রাহ্মণের ডাকে নয়।মৃত্যূর পর পূর্বপুরষের সাড়া দেবার ক্ষমতা থাকলে তার আত্মীয় উত্তর পুরুষদের ডাকে সাড়া দিতো, অনাত্মীয় ব্রাহ্মণের ডাকে নয়।কবে মানুষ এসব ভেবে দেখবে ?
ঈশ্বরে বিশ্বাস থাকলে ব্রাহ্মণকে দিয়ে না ডাকিয়ে নিজে ডাকুন আর মৃতব্যক্তিকে এবং পিতৃপরুষকে শ্রদ্ধা জানাতে হলে ব্রাহ্মণকে দিয়ে শ্রাদ্ধ্য না করে নিজে শ্রদ্ধাভক্তি ভরে শ্রদ্ধা অনুষ্ঠান করুন।শ্রীচৈতন্যের সমসাময়িক “অষ্টবিংশতিতত্বের” জনক আচার্য রঘুনন্দন ধর্মসংস্কারের নামে ধর্মকে আরোও অপাচ্য করে তুলেছেন।তাঁর প্রায়শ্চিত্তবিধান হাস্যকর।রান্নাঘরে কুকুর,বিড়াল ঢুকলেও তিনি প্রায়শ্চিত্তের জটিল বিধান দিয়েছেন।কুকুর,বিড়াল,শেয়াল কামড়ালে ও প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।এমনই ধর্মসংস্কার ব্রাহ্মণ্যবাদীদের।স্বামী
বিবেকানন্দ বলেছিলেন-“বেদ ছাড়া
সমস্ত শাস্ত্রগ্রন্থ পুনরায় লিখতে হবে”।“মৃত্যূর পর মানুষ স্বর্গে যায় এটা কল্পনা মাত্র। সজ্জন ব্যক্তি মৃত্যূর পর স্বর্গে
গিয়ে অনন্ত সুখময় জীবন যাপন করে এ ধারনা স্বপ্ন মাত্র।স্বর্গ,নরক এসব
আদিমধারনা”।(বানী ও রচনা-দশম খন্ড-পৃষ্ঠা-১৫৯)..........স্বামী বিবেকানন্দ
অর্থাৎ এ ধর্মের সংস্কার অসম্ভব।এ ধর্ম ক্ষয়িষ্ণু হতেই
থাকবে তবু সংস্কার সম্ভব নয়।কারন এ ধর্মকে শক্তিশালী করার জন্য সংস্কার করতে গেলে জাতপাত,বর্নপ্রথা
ও ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের ধ্বংস আবশ্যক।কিন্তু এগুলিই
আবার হিন্দুধর্মের মেরুদন্ড।ফলে সংস্কার করতে গেলে এ ধর্মের কিছুই বাঁচবে না।তাই
এই ধর্মের সংস্কারের আশা না করে ব্রাহ্মণ্যবাদ সহ ব্রাহ্মণ্যবাদী সমস্ত কুসংস্কার
ত্যাগ করুন।
এমন সমাজের গুড
সার্টিফিকেটের প্রত্যাশা না করা উচিত,যে সমাজ ধর্মান্ধঃ-
মানবতাবিরোধি,কুসংস্কারপূর্ণ,জঘণ্য ব্রাহ্মণ্যবাদী
রীতিনীতির বিরুদ্ধাচারণ করলে বাড়ীর বড়রা বলেন-“ছি-ছি সমাজ কী বলবে?”অর্থাৎ সমাজের
মানুষ খারাপ বলবে।হিন্দু সমাজ,ব্রাহ্মণ স্বার্থরক্ষ্যাকারী সেই ধর্মকে নিজধর্ম
ভেবে পুষ্ট করে চলেছে,যে ধর্মে হিন্দুর মঙ্গল দূরে থাক,হিন্দুর কোন কথাই
নেই।ব্রাহ্মণ কেন্দ্রীক ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মকে হিন্দুধর্ম বানানো হয়েছে,আর হাজার
বছর ধরে মানুষকে এই ধর্মের নেশায় নেশাগ্রস্হ করা হয়েছে।হিন্দু সমাজের মানুষ আজও এই
ধর্মের নেশায় আছন্ন।নেশাগ্রস্হ মানুষ নিজের ভালোও বোঝে না,এমন মানুষের ভালো-মন্দ
বোধ এবং বিচার বিবেচনা লোপ পায়।সমাজের ধর্মভীরু মানুষের ভালো-মন্দ এবং বিচার বোধ
বোধ দেখুনঃ-
১।সামান্য দুধ
মাটিতে ফেলার জন্য যে মা তাঁর সন্তানকে বকাবোকি করেন,সেই মা আবার পরম আনন্দে এক ঘটি দুধ পাথর(শিব)এর মাথায়
ঢেলে দিয়ে অসীম তৃপ্তি বোধ করেন।আর সমাজ এমন মাকে পরম
ভক্তিমতি সৎ মহিলা বলে প্রশংসা করে।
২।যে নারী পুতুল
নিয়ে খেলা করে,পুতুলের সাথে কথা বলে,পুতুল নিয়ে ঘুমায় সমাজ তাকে পাগলি
বলে।আবার যে নারী পাথরের গোপাল(কৃষ্ণ)কে স্নান করায়,খেতে দেয়,গরমে পাখার বাতাস
দেয়,মশারী টাঙিয়ে সুন্দর বিছানা করে গোপালকে শুতে দেয়,গান গেয়ে ঘুম পাড়ায়,সেই
নারীকে সমাজ পরম ভক্তিশীলা ধর্মীয় মহিলার স্বীকৃতি দেয়।
৩।ভূত,প্রেতে
বিশ্বাস করলে সমাজের মানুষ যে ছেলেকে উপহাস করে,পিতা-মাতার মৃত্যূর পর ব্রাহ্মণকে
প্রচুর দান-ধ্যান করে মৃত পিত-মাতার ভূত বা প্রেতাত্মার পূজা বা শ্রাদ্ধ
করে প্রচুর ব্রাহ্মণভোজন সহ পাড়াশুদ্দু লোককে পেটপুরে খেতে দিলে সমাজের মানুষ সেই
ছেলেকে গুনী সু-সন্তান বলে
সার্টিফিকেট দেয়।
এমন সমাজের
মানুষের গুড সার্টিফিকেটের আশা না করে সমাজকে সচেতন করা উচিত।আধুনিক নব্য শিক্ষিত
প্রতিটি মানুষের উচিত কুসংস্কারপূর্ণ জঘণ্য মানবতবিরোধি ব্রাহ্মণ্যবাদী রীতিনীতির
বিরোধিতা করা।
কবীরঃ মানবতার শিক্ষক
ভক্ত কবীরের গুরু রামানন্দের পিতার
শ্রাদ্ধ।শ্রাদ্ধ এমন এক পরম্পরা যেখানে সন্তান প্রচুর ব্রাহ্মণ ডেকে ভরপেট ভোজন
এবং সেবা করাবে,আর ঐ ভোজন দ্রব্য নাকি মৃত পিতা-মাতার নিকট পৌঁছে যাবে।মৃত পিতার নিকট ভোজন
দ্রব্য পৌঁছে দেবার জন্য গুরু রামানন্দ অনেক ব্রাহ্মণ নিমন্ত্রন করলেন।আর বালক
শিষ্যদেরকে সকাল থেকে এই কাজে লাগিয়ে দিলেন।বালক শিষ্য কবীরের ভাগে দুধ আনার
দায়িত্ব পড়ল।কবীর সকালে একটি বালতি নিয়ে দুধ আনতে বেরিয়ে পড়লেন।কবীর সকালে দুধ
আনতে বেরিয়ে,দুপুর গড়িয়ে গেলেও ফিরলেন না।এদিকে গুরু দুধ ছাড়া ব্রাহ্মণ সেবা করতে
বাধ্য হলেন।কবীর না ফেরায় গুরু চিন্তায় অস্থির হলেন এবং কয়েকজন শিষ্যকে
নিয়ে তাঁর খোঁজে বেরিয়ে পড়লেন।অনেক খোঁজাখুঁজির পর গুরু দেখলেন কবীর বালতিটি নিয়ে একটি মৃত গাভীর
পাশে বসে আছে।আশ্চর্য হয়ে গুরু জিজ্ঞাসা করলেন, “এখানে কী করছো ?” কবীর
বললেন,গাভী কখন দুধ দেয় সেই অপেক্ষায় বসে আছি।গুরু বললেন, “মরা গাভী
কী দুধ দেয় ?” কবীর বললেন, “ব্রাহ্মণদের ভোজনের দ্রব্য যদি আপনার মৃত
পিতার নিকট পৌঁছে যেতে পারে এবং আপনার মৃত পিতা যদি তা গ্রহন করতে পারে তাহলে মৃত
গাভী দুধ দেবেনা কেন?”শিষ্যের কথা শুনে গুরু তাকে বুকে জড়িয়ে ধরলেন এবং বললেন, “তুমি
আজ আমার চোখ খুলে দিলে”।
গুরু রামানন্দের চোখ তো অনেক আগে খুলেছে, আমাদের চোখ কবে খুলবে ?
ঃমতামত ব্যক্তিগতঃ
PRASANTA KUMAR MONDAL.
No comments:
Post a Comment