Wednesday, 25 January 2017

প্রতিটি ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুধর্মশাস্ত্র চরম শূদ্র বিরোধি:





           



প্রতিটি ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুধর্মশাস্ত্র চরম শূদ্র বিরোধি:

 প্রশান্ত-কুমার-মণ্ডলঃ                                                                             
 পৃথিবীর কোনোও ধর্ম মানুষে মানুষে এমন ভেদাভেদ তৈরী করেনি যেমনটি হিন্দুধর্ম করেছে।হিন্দুধর্মের ধ্বংসের বীজ হল জাতিভেদ প্রথা যা হিন্দুধর্মের মধ্যে নিহিত আছেজাতিভেদ প্রথা যেন হিন্দুদের রক্তে মিশে গেছে।হিন্দুধর্মের মূল নীতি হল জাতপাত মেনে চলা ও পরস্পরকে ঘৃণা করা।অনেক শিক্ষিত হিন্দুকে বলতে শোনা যায় আমরা জাতপাত মানি না।কিন্তু তলে তলে তারা সব মানে।সুযোগ পেলেই নিজের জাতের বড়াই করে এবং নিজের জাত ছাড়া ছেলে মেয়ের বিয়েই দেয় নাএমন মেকি আধুনিক শিক্ষিত হিন্দুর সংখ্যা পশ্চিমবঙ্গেও কম নেই।মানবতাহীন জঘণ্য জাতিভেদ প্রথা যারা পরমভক্তিভরে মেনে চলে তাদের জানা উচিত,এই বঙ্গের স্বনামধন্য শাস্ত্রকার শ্রীচৈতন্যের সমসাময়িক আচার্য রঘুনন্দন ভট্টাচার্যের মতে বঙ্গে দুই জাতি-ব্রাহ্মণ ও শূদ্র।বঙ্গে গড়ে শূদ্র ৯৪% এবং ব্রাহ্মণ ৬%,এখানে কোনো ক্ষত্রিয় বা বৈশ্য নেই।হাস্যকর ব্যাপার হল এখানে শূদ্ররা পরস্পর মারামারি করে কে উঁচু,কে নিচু তাই নিয়ে।অথচ বাংলায় ভ্রমন করে কেউ জাত খোয়াতে চাইতো না।কেননা বাংলায় ভ্রমন করলে জাত যেত।বাংলাকে ম্লেচ্ছ দেশ বলা হতো(বাঙালী জাতি ও বাংলাভাষা-বিপ্লব দাসগুপ্ত,পৃঃ৩০)বৃহস্পতি সংহিতা,বিষ্ণু সংহিতা,পরাশর সংহিতা,যাজ্ঞবল্ক্য সংহিতা,বশিষ্ঠ ধর্মসূত্র,অত্রি সংহিতা,কাত্যায়ন সংহিতা,নারদ সংহিতা,অপস্তম্ভ ধর্মসূত্র এবং মনুসংহিতা প্রভৃতি ব্রাহ্মণ্যবাদী শাস্ত্রগ্রন্থ গুলি সবই মানবতাবিরোধি এবং শূদ্র ত্ত নারী বিদ্বেষী হিসাবে ঘৃনিতসব থেকে ঘৃনিত এবং মানবতাবিরোধি শাস্ত্রগ্রন্থ হলো মনুসংহিতা।মনুসংহিতা পাঠ করলে যে কোনো মানুষ ভারতের ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের জঘন্য,ঘৃনিত,নিষ্ঠুর এবং নোংরা মানসিকতার পরিচয় পাবেভারতের ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের উদ্দেশ্য হল দেশের শূদ্র নারীকে আজীবন দাস বানিয়ে রাখা।মনুসংহিতার শূদ্র নারী বিদ্বেষের বহর দেখলে যে কোনো মানুষ ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রের গায়ে থুথু ফেলতে বাধ্যসমস্ত ধর্মগ্রন্থ ধর্মশাস্ত্রে দেশের বৃহত্তর অংশের প্রতি ঘৃন্য চরম মানবতাবিরোধি নিষ্ঠুর বিধান পাঠ করলেই বোঝা যাবে কেন এই ধর্ম আজ ক্ষয়িষ্ণুব্রাহ্মণ্যবাদীরা দেশের একটি বিরাট সম্প্রদায়(শূদ্র)কে কেমন পশুতুল্য করেছে দেখুনপৃথিবীর কোথাও কোনো ধর্মশাস্ত্রগ্রন্থ মানুষকে এমন পশুজ্ঞান করেনিনিম্নে কিছু কুখ্যাত ব্রাহ্মণ্যবাদী শাস্ত্রকারের মানবতাবিরোধি শূদ্র বিদ্বেষী কয়েকটি মাত্র শ্লোক উল্লেখ করলাম।
                                     ১/মনুসংহিতাঃ-
    মানবতাবিরোধি মনুসংহিতার শূদ্র বিদ্বেষের কিছু নমূনা পাঠ করুন……………..
/৬১-যে দেশে শূদ্র রাজা সে দেশে ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয়,বৈশ্য বাস করবে না
১১/২৪-যজ্ঞ বা কোন ধর্মীয় কাজের জন্য ব্রাহ্মণ কখন শূদ্রের নিকট থেকে কিছু ভিক্ষা করবে না
তাতে ব্রাহ্মণ চন্ডালত্ব প্রাপ্ত হবে
/৩৭৪-শূদ্র যদি উচ্চতর বর্নের নারী সে সুরক্ষিতা বা অসুরক্ষিতা যাই হোক না কেনো,তার সঙ্গে অবৈধ্য সম্পর্ক করলে,অরক্ষিতা হলে তার লিঙ্গছেদ করা হবে,সুরক্ষিতা হলে প্রানদন্ড এবং সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হবে
/১০-জ্ঞানবান বা গুনবান না হলেও রাজা সর্বদা ব্রাহ্মণকূলে জন্মগ্রহনকারী ব্যাক্তিকে তার পরামর্শদাতা নিয়োগ করবেন;কিন্তু কদাচ কোন গুনবান শূদ্রকে কাজ়ে নিযুক্ত করবে না
/২১-কোন রাজার পরামর্শদাতা শূদ্র হলে পাঁকে নিমগ্ন গরুর ন্যায় সেই রাজার রাজত্ব  রসাতলে তলিয়ে যাবে।
/২৭২-শূদ্র যদি অহঙ্কারবশতঃ কোন ব্রাহ্মণকে ধর্মপোদেশ দেয়, তবে রাজা তার মুখে কর্নে উত্তপ্ত তৈল ঢেলে দেবে।
/১৫৬-যিনি শূদ্র ছাত্রকে শিক্ষাদান করেন এবং যিনি শূদ্রকে গুরু হিসাবে মান্য করেন তিনি কোন
অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রন পাওয়ার অযোগ্য।
/৯৯-শূদ্রের সন্মুখে কেহ কখন বেদ পাঠ করবে না।
১০/১২৯-শূদ্র অর্থ উপার্জনে সক্ষম হলেও অর্থ সঞ্চয় করতে পারবে না।কারন ধনমদে মত্ত হয়ে সে ব্রাহ্মণকে অপমান করতে পারে।
/৪১৭-প্রয়োজন হলে ব্রাম্ভন শূদ্রের ধন গ্রহন করতে পারে।
/৯১-ব্রহ্মা শূদ্রের জন্য মাত্র একটি পেশা নির্ধারন করেছেন তা হল উচ্চতর তিন বর্ন-ব্রাহ্মণ,ক্ষ্রত্রিয়ও বৈশ্যের সেবা কর্ম।                                                    
১০/১২১-শূদ্র যদি ব্রাহ্মনের সেবার দ্বারা জীবন ধারনে অক্ষম হয়, তবে সে ক্ষত্রিয়ের অথবা ধনি বৈশ্যের সেবা করে জীবিকা নির্বাহ করবে
১০/১২২-শূদ্র স্বর্গ লাভ করার জন্য বা স্বর্গ নিজ জীবিকা,এই উভয়ের জন্য ব্রাহ্মণের সেবা করবে
১০/১২৩-ব্রাহ্মণের সেবাতেই শূদ্রের জীবন স্বার্থকএছাড়া শূদ্রের অন্য কর্ম নিস্ফল    @prasanta
/৪১৩-ক্রীত হোক বা ওক্রীত হোক ব্রাহ্মন শূদ্রের দ্বারা তার দাসকর্ম করিয়ে নেবেকারন বিধাতা শূদ্রকে ব্রাহ্মণের সেবার জন্য সৃষ্টি করেছেন
১০/১২৪-শূদ্রের পরিচর্যা করার ক্ষমতা তার কর্ম নিপুনতা এবং তার পোষ্যবর্গের সংখা বিবেচনা করে প্রভু তার বেতন নির্ধারন করবেন
১০/১২৫-প্রভু তার খাদ্যের উছিষ্টাংশ,তার পুরানো বস্ত্র,তার শস্যের পরিতক্তাংশ এবং তার জীর্ন শয্যা শূদ্রকে দেবেন
/২৭০-শূদ্র যদি কোন দ্বিজকে অমার্জিত ভাষায় এবং আচরনে  অপমান করে এবং বিদ্রুপ করে তবে তার জিভ কেটে নেওয়া হবে কারন তার জন্ম ব্রহ্মার পা থেকে
/২৭১-নাম জাতি তুলে কোন শূদ্র যদি ব্রাহ্মণ,ক্ষত্রিয় বৈশ্যের প্রতি অসম্মান জনক ভাষা ব্যবহার করে তবে তার মুখে দশ অঙ্গুলি পরিমান লৌহ শলাকা উত্তপ্ত করে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে
/৩১-একজন ব্রাহ্মণের নামের প্রথম অংশ হবে মঙ্গল বাচক,ক্ষত্রিয়ের শক্তি বাচক আর বৈশ্যের ঐশ্বর্যবাচক কিন্তু একজন শূদ্রের ক্ষেত্রে তা হবে হীনতাবাচক
/৩২-একজন ব্রাহ্মণের নামের দ্বিতিয়াংশ হবে শর্মন অর্থাত কল্যানবাচক শব্দ,ক্ষত্রিয়ের ক্ষেত্রে রক্ষা বাচক,বৈশ্যের ক্ষেত্রে সমৃদ্ধিবাচক আর শূদ্রের ক্ষেত্রে তা হবে সেবাবাচক শব্দ
/১৪০-শাস্ত্রানুযায়ী জীবনযাপনে রত শূদ্র প্রতিমাসে মস্তক মুন্ডণ করবেজন্ম মৃত্যুর ক্ষেত্রে বৈশ্যদের মত অশৌচ পালন করবে এবং দ্বিজদের উছিষ্ট খেয়ে জ়ীবন ধারন করবে
/৯৬-সৃষ্ট বস্তুসমুহের মধ্যে প্রানীগন শ্রেষ্ঠ;প্রানীদের মধ্যে যাদের বিচারবুদ্ধি আছে তারা শ্রেষ্ঠ;বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন প্রানীদের মধ্যে মানুষ শ্রেষ্ঠ এবং মানুষের মধ্যে ব্রাহ্মণ শ্রেষ্ঠ
/১০০-জগতে যা কিছু ধনসম্পদ আছে তা সব ব্রাহ্মনের কারন ব্রম্ভার মুখ থেকে ব্রাম্ভনের জন্ম বলে ব্রাহ্মণ সকল সম্পদের অধিকারী
/৩১৯-বিদ্বান হোক আর মুর্খই হোক ব্রাহ্মণ দেবতা স্বরুপ
/১১০-ব্রাহ্মণের গৃহে ক্ষত্রিয়,বৈশ্য,শূদ্র, বন্ধু,আত্মীয় অথবা গুরু এলেও তারা অতিথি পদবাচ্য হবেন না
/১১২-যদি বৈশ্য শূদ্র ব্রাহ্মণের গৃহে অতিথি হিসাবে আসে,তবে গৃহকর্তা সহৃদয়তার সঙ্গে বাড়ীর চাকরদের সাথে ভোজন করাবেন
১০/৮১-ব্রাহ্মণ যদি তার নিজের বৃত্তির দ্বারা জীবিকা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় তবে সে ক্ষত্রিয় বৈশ্যের বৃত্তি গ্রহন করতে পারে কিন্তু শূদ্র তার বৃত্তি পরিবর্তন করতে পারবে না
/৩৭৯-শাস্ত্রের বিধান হল অন্যান্য ব্যক্তির পক্ষে প্রান দন্ডের যোগ্য অপরাধে ব্রাহ্মণের কেবল মাত্র মস্তক মুন্ডন করলেই হবে
/৩৮০-সর্বপ্রকার পাপে পাপী হলেও ব্রাহ্মণ কে কখনো মৃত্যুদন্ড দেওয়া যাবে না
/৩৮১-ব্রাহ্মণ বধের মত অধর্ম পৃথিবীতে নেই
/২৪১-শুকর ঘ্রানের দ্বারা,কুক্কুট পক্ষবায়ুর দ্বারা,কুকুর দৃষ্টিপাতের দ্বারা,শূদ্র স্পর্শের দ্বারা শ্রাদ্ধাদিকর্ম নষ্ট করে
/২২-যে রাজ্য ব্রাহ্মণবিহীন এবং শূদ্র নাস্তিকে পরিপুর্ন সেই রাজ্য দুর্ভিক্ষ এবং নানা প্রকার ব্যধিতে পীড়িত হয়ে অতি সত্ত্বর বিনাশপ্রাপ্ত হয়
/২৭৭-বৈশ্য শূদ্র যদি বিবাদ করে তবে বৈশ্যকে আড়াই শতপণ এবং শূদ্রকে পাঁচশতপণ দন্ড দেওয়া হবে
/২৭৯-শূদ্র যে অঙ্গের দ্বারা শ্রেষ্টত্তর জাতিকে প্রহার করে রাজা তার সেই অঙ্গ ছেদন করবেন
/২৮১-শূদ্র যদি উচ্চত্তর জাতির আসনে বসার চেষ্টা করে তবে রাজা তার পশ্চাৎদেশ কর্তন করে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করবেন                                          
/২৮২-শূদ্র যদি দর্পভরে ব্রাহ্মণের গায়ে থুথু দেয় তবে রাজা তার ওষ্ঠদ্বয় ছেদন করবেন,ব্রাহ্মনের গায়ে প্রস্রাব করে দিলে তার লিঙ্গ ছেদন করবেন আর ব্রাহ্মনের সামনে অধোবায়ু ত্যাগ করলে তার গুহ্যদেশ ছেদন করবেন
/২৮৩-শূদ্র ব্রাহ্মণের কেশ ধারন করলে বিচার না করেই তার বাহু ছেদন করা হবে  
১১/১৩২-কুকুর কাক হত্যা এবং শূদ্র হত্যা সমতুল্য                                         
/৪১-ব্রাহ্মণের সেবাকার্যের জন্য ভগবান শূদ্রের সৃষ্টি করেছেন   @prasanta
১০/১২৩-শূদ্র নিজ কর্মচ্যুত হলে চৈলাশক নামক বস্তুস্থিত কীট ভক্ষকপ্রেত হয়অর্থাৎ শূদ্র তার পেশা পরিবর্তন করতে পারবে না
৯/৩১৯-“ব্রাহ্মণ নীচ কার্যে যুক্ত থাকলেও সকলের নিকপ পূজ্য কারন ব্রাহ্মণ হল নরলোকের দেবতাস্বরুপ।
১০/১২৯-“শূদ্র অর্থ উপার্জনে সক্ষম হলেও ধন সঞ্চয় করবে না কারন ধনমদে মত্ত হয়ে সে ব্রাহ্মণকে অপমান করতে পারে।
৮/৩৬৬-শূদ্র যদি উচ্চ বর্নের নারীকে প্রেম নিবেদন করে তার শাস্তি মৃত্যূদন্ড।
৮/৩৫৯-শূদ্র পুরুষ যদি ব্রাহ্মণ রমনীর সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় তবে তার নির্মম মৃত্যূদন্ড হবে।
৩/১৫৬-শূদ্রকে শিষ্য করবে ন এবং শূদ্রের শিষ্য হবে না।
মানবতাবিরোধী কুখ্যাত মনু সংহিতার চরম মানবতাহীন মাত্র কিছু শ্লোক এখানে উল্লেখ করা হলতবে অন্যান্য ব্রাহ্মন্যবাদী শাস্ত্রকারেরা যেমন বিষ্ণূ,পরাশর,বশিষ্ঠ,কাত্যায়ন,যাজ্ঞবল্ক এঁরাও কম কুখ্যাত নন তবে এঁরা মনুমহারাজের কাছে শিশুকারন মানুষকে পশু প্রতিপন্ন করতে পৃথিবীতে মনুর জুড়ি নেইসমস্ত শাস্ত্রের শাস্ত্রকার সবাই ব্রাহ্মণব্রাহ্মণ্যবাদীদের মুর্খতা,নিষ্ঠুরতা কান্ডজ্ঞান হীনতার ফল ভোগ করছে হিন্দুসমাজএটাই হিন্দুধর্ম যে তার নিজের কবর নিজে খুঁড়ে রেখেছেমানুষে মানুষে বিভেদ তৈরী করে কোনো ধর্ম কী শক্তিশালী হতে পারে?ধর্মের এই অমানবিক পক্ষপাতিত্বের জন্য প্রচুর মানুষ আজ পর্যন্ত এই ধর্ম ত্যাগ করেছেতাই হিন্দুধর্মের দুর্বলতা ক্ষয়িষ্ণুতার জন্য একমাত্র ব্রাহ্মণ্যবাদীরাই দায়ি             
    বাকী শাস্ত্রকারদের কিছু মাত্র শ্লোক উপস্থিত করলাম।সমস্ত শ্লোক দেওয়া তো সম্ভব নয়।
                                                    ২/বশিষ্ঠ ধর্মসূত্রঃ-শূদ্র বিদ্বেষঃ-
Ø  শূদ্রজাতি শ্মশানভূমি তুল্য,শূদ্রের সামনে বেদ পাঠ করবে না।(১৮/১১-১৫)
Ø  শূদ্রের অন্ন পেটে নিয়ে মারা গেলে পরবর্ত্তী জন্মে গ্রাম্য শূকর হবে বা শূদ্রের ঘরে জন্মাবে।
Ø  শূদ্রের অন্ন খেয়ে সহবাস করলে,সন্তানও শূদ্র হবে।স্বর্গে যেতে পারবে না।(৬/২৭-২৯)
Ø  প্রতিহংসা,ঈর্ষা,মিথ্যা বলা,ব্রাহ্মণদের নিন্দা করা,পিছনে গালি দেওয়া,নিষ্ঠুরতা-এ সব শূদ্রের বৈশিষ্ট।(৬-১৪)    
                                                        ৩/বিষ্ণুস্মৃতিঃ-শূদ্র বিদ্বেষঃ
Ø কোন ব্রাহ্মণ শূদ্রের শব বহন করবে না।কোন শূদ্র ব্রাহ্মণের শব স্পর্শ করবে না।
Ø কোন দেবতার অনুষ্ঠানে শূদ্রকে অতিথি করা যাবে না।
Ø নিম্ন বর্নের লোক উচ্চ বর্নের লোককে আঘাত করলে যে দ্বারা আঘাত করবে সে অঙ্গ দেহ থেকে বঞ্চিত হবে।
Ø  উচ্চ বর্নের আসনে বসলে শূদ্রের পাছায় ছাপ দিয়ে নির্বাসন দেওয়া হবে।
Ø  উচ্চ বর্নের সামনে বাতকর্ম করলে শূদ্র পিছনের অংশ হারাবে।
Ø  উচ্চ বর্নের সামনে থুথু নিঃক্ষেপ করলে শূদ্র তার দুটি ঠোঁট হারাবে
Ø  উচ্চ জাতিকে বিদ্রুপ করলে ১০ ইঞ্চি লম্বা লৌহ শলাকা শূদ্রের তার মুখের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে।
Ø  নাম করনের ক্ষেত্রে শূদ্রদের নাম সবসময় ঘৃণা সূচক হবে।
                                               ৪/বৃহস্পতি স্মৃতিঃ-শূদ্র বিদ্বেষঃ-
Ø  কোন শূদ্র যদি ব্রাহ্মনকে জ্ঞান দেয় বা বেদের শব্দ উচ্চারন করে বা ব্রাহ্মণকে অপমান করে তবে তার জিহ্বা কেটে ফেলতে হবে।
                                              ৫/গৌতম ধর্মসূত্রঃ-শূদ্র বিদ্বেষঃ-
Ø  শূদ্র পুরুষ কোন আর্য নারীকে ধর্ষন করলে তার লিঙ্গ কেটে ফেলা হবে,তার অভিভাবকের মৃত্যূদন্ড হবে এবং তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হবে।তবে প্রথম তিন বর্নের কেউ শূদ্র নারীকে ধর্ষণ করলে কেবল সমাজ থেকে বহিস্কার করা হবে।
Ø  শূদ্র যদি প্রথম তিন বর্নের সাথে ব্যাভিচারী হয় তবে তার মৃত্যূদন্ড হবে।
Ø  শূদ্র উচ্চ বর্নের লোকেদের থেকে জেনে নেবে তার কি কাজ।
Ø  শূদ্র দ্বিজ জাতির লোকের সাথে গালাগালি বা মারামারি করলে তার অঙ্গ ছেদ করতে হবে।
Ø  শূদ্র যদি দ্বিজ জাতির লোকের আসনে বসে বা ঘুমায় তাহলে তা দৈহিক নির্যাতন করতে হবে।
Ø  ১২শ,৪- শূদ্র যদি বেদ শ্রবন করে তবে তার দুটো কান  গলিত সীসা বা লাক্ষা দিয়ে পূর্ন করা হবে,যদি বেদ উচ্চারণ করে তবে জিভ কেটে নেওয়া হবে এবং যদি বেদ আয়ত্ত করে ফেলে তবে তার শরীর খন্ড খন্ড করা হবে।
                        ৬/অপস্তম্ভ ধর্মসূত্রঃ-শূদ্র বিদ্বেষঃ-
Ø  উচ্চ তিন বর্নের সবা করা শূদ্রের পরম কর্তব্য।
P
K
M
Ø  শূদ্র যদি প্রথম তিন বর্নের নারীর সাথে ব্যাভিচারী হয় তবে তার মৃত্যূদন্ড হবে।
Ø  শূদ্র হত্যায় অপরাধ কম।
Ø  ব্রাহ্মণের বাড়ীতে অতিথি শূদ্রকে আপ্যায়ন করবে ব্রাহ্মনের বাড়ীর ভৃত্য।
Ø  শূদ্র যদি অতিথি হিসাবে কোন ব্রাহ্মণের বাড়ীতে আসে তবে ব্রাহ্মণ তাকে কোন
কাজ করতে দেবে এবং কাজের শেষে তাকে খেতে দেবে।
                                              ৭/নারদ স্মৃতিঃ-শূদ্র বিদ্বেষঃ-
Ø  শূদ্র যদি দ্বিজ বর্নের বিরুদ্ধে মিথ্যা নালিশ জানায় তবে রাজা তার জিহ্বা দ্বিখন্ডিত করবে
Ø  শূদ্র হয়ে দ্বিজ বর্নের লোকের অপমান করলে তার মুখে তপ্ত লৌহ শলাকা ঢোকাতে হবে।
Ø  শূদ্র যদি ব্রাহ্মণকে উপদেশ দেয় তবে রাজা তার মুখ ও কানে গরম তেল ঢেলে দেবে।
Ø  শূদ্র উচ্চ বর্নের আসনে বসলে পাছায় ছাপ ও নির্বাসন।
Ø  শূদ্র উঁচু জাতির লোকের সামনে থুথু ফেললে তা ঠোঁট কাটা যাবে।
Ø  শূদ্র উঁচু জাতির লোকের সামনে প্রসাব বা বাতকর্মের শাস্তি ও লিঙ্গচ্ছেদ ও পাছা কর্তন।

এই সব কুখ্যাত মানবতাবিরোধি,ব্রাহ্মণ্যবাদী শাস্ত্রকারদের জঘন্য পরিকল্পনায় জাতপাত,বর্ণপ্রথার বিষে আজ হিন্দুধর্ম জর্জরিত।ক্ষয়প্রাপ্ত হিন্দুধর্মের মহান ব্রাহ্মণ্যবাদী শাস্ত্রকার এরা।এদের স্বার্থপর লোভলালসা ও মূর্খতার জন্য আজ হিন্দুধর্মের চরম দুর্দিন।হিন্দুরা আজও বর্ণপ্রথা ও জাতপাতের জীবাণুতে আক্রান্ত।অশিক্ষিত ও শিক্ষিত বেশীরভাগ মানুষ হিন্দুধর্মের এই মারণ জীবানুর শিকার।ব্রাহ্মণ্যবাদী শাস্ত্রকারদের শেখানো বর্ণ ও গোত্রের মধ্যে হিন্দুরা বড় হয়, বংশবিস্তার করে এবং মরে যায়।এর বাইরে কেউ বেরুতে চায় না।ব্রাহ্মণ্যবাদী শাস্ত্রকারেরা মানুষকে শিখিয়েছে জাতপাত,বর্ণ,গোত্রের ছোট ছোট সংকীর্ন গন্ডিতে কূয়োর ব্যাঙের মত আবদ্ধ থাকতে।
জাতপাত,বর্ণের মধ্যে আবদ্ধ থেকে মরে যাও তবু অন্য বর্ণে ঢোকার চেষ্টা করো নাএটি গীতার বানী।শাস্ত্র অনুযায়ী তাই হিন্দুরা পরস্পর থেকে পৃথক হয়ে‌,পরস্পরকে ঘৃণা করে ছোট ছোট সংকীর্ন গন্ডীর মধ্যে বাস করে।শাস্ত্র হিন্দুদের পরস্পর মেলামেশা করতে,একতাবদ্ধ হতে নিষেধ করেছে।কারন পরস্পর মিলেমিশে গেলে বর্ণধর্ম ভেঙে যাবে ফলে ব্রাহ্মণের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।শিক্ষার হার বাড়লেও হিন্দুজাতির সংকীর্ন ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্ম চিন্তার কোনো পরিবর্তন হয় নি।তাই আজও উচ্চ শিক্ষিত মানুষ তার সংকীর্ন গন্ডীর মধ্যে বর্ণ,গোত্র মিলিয়ে পাত্রপাত্রী নির্বাচন করে।হিন্দুধর্মের স্বার্থে পরস্পরের মধ্যে বৃহৎ আত্মীয়তা এখনো মানুষ অনুভব করেনি।যোগ্যতমের উদ্বর্তন এখনো হিন্দুধর্ম স্বীকার করে না।ভারতের সংবিধান ও হিন্দুরা মানে না,মানলে যোগ্যতাই মানুষের মাপকাঠি হতো এবং অসবর্ণ বিবাহের প্রসার ঘটতো।অসবর্ণ বিবাহের প্রসার না ঘটলে পরস্পর আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ না হলে হিন্দুধর্মের সমূহ ক্ষতি।হিন্দুধর্মের স্বার্থে ব্রাহ্মণ্যবাদীদের বানানো মানবতবিরোধি সমস্ত শাস্ত্রগ্রন্থ,তাদের বানানো অসংখ্য দেবদেবী এবং মূল ষড়যন্ত্রী ব্রাহ্মণ পুরোহিতকে ত্যাগ করতে হবে।কারণ জাতপাত,বর্নপ্রথা,পাপপূণ্য,স্বর্গ,নরক,জন্মান্তরবাদ ও অসংখ্য দেবদেবীর দ্বারা মানুষকে অন্ধকার কূপে আবদ্ধ করেছে ব্রাহ্মণ্যবাদীরাএগুলিই হিন্দুদের মিলনের পথে একমাত্র বাধা।বৃহত্তর স্বার্থে জাতপাত,বর্ণ ভুলে সবাইকে হিন্দু হতে হবেবিহার,উত্তরপ্রদেশে জঘন্য বর্ণপ্রথার দলাদলিতে হিন্দুরা নাজেহাল।পশ্চিমবঙ্গে বর্ণপথার দুটি বর্ণই অনুপস্থিত-ক্ষত্রিয় ও বৈশ্য।শাস্ত্রকার আচার্য রঘুনন্দনের মত অনুসারে এখানে গড়ে শূদ্র ৯৪% এবং ব্রাহ্মণ ৬% অথচ চরম হাস্যকর ব্যাপার হল এখানে ৯৪% শূদ্র নিজেরা নিজেদের ঘৃণা করে।অর্থাৎ এখানে শূদ্ররা নিজেদের উঁচু্‌,নীচু প্রতিপন্ন করে পরস্পর পরস্পরকে ঘৃণা করে।হিন্দুধর্মের চরম অবস্থা আসন্ন।কারন এখনো অনেক উচ্চশিক্ষিত হিন্দু জঘণ্য বর্ণপ্রথাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করা দূরে থাক নিজেদেরকে আবার উচ্চবর্ণের বলে বড়াই করে।হিন্দুধর্মের ধ্বংসের বীজ হিনদুধর্মের মধ্যে নিহিত।ব্রাহ্মণ্যবাদী শাস্ত্রকারদের জঘন্য মনবতাবিরোধি ঐক্য বিনষ্টকারী পরিকল্পনা হিন্দুধর্মের বাঁধন আলগা করে দিয়েছে।জাতপাত,বর্ণপ্রথার ভঙ্গুর ভিত্তির উপর তাসের ঘরের মত দাঁড়িয়ে আছে হিন্দুধর্ম।তাই হিন্দুধর্মকে বাঁচাতে গেলে জাতপাত,বর্ণপ্রথার সাথে সাথে ব্রাহ্মণ্যতন্ত্রকে ও ত্যাগ করতে হবে।
PRASANTA KR. MONDAL
  ঃমতামত ব্যক্তিগতঃ                    

No comments:

Post a Comment