Monday, 30 January 2017

যত-ধর্ম-তত-মতঃ



যত-ধর্ম-তত-মতঃP.K.Mondal.                                                                                                                                                                পৃথিবীতে যত ধর্ম আছে তাদের কোনোটির সাথে কোনোটির কোন মিল নেইপৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ তাদের কল্পনা মতো ঈশ্বর,স্বর্গ,নরক বানিয়েছে স্বপ্নের প্রাসাদের মতোপৃথিবীর প্রতিটি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের আত্মা,প্রেতাত্মা,স্বর্গ,নরক ও ধর্মের নিয়ম-নীতি সম্পূর্ণ আলাদা।বৌদ্ধধর্ম ছাড়া পৃথিবীর প্রতিটি ধর্ম দাবী করে যে তাদের ধর্মের বানী ঈশ্বরের মুখনিঃসৃত অর্থাৎ ঈশ্বরের বানী।ধর্মে ধর্মে যখন কামড়া-কামড়ি বাধে,তখন শান্তিপ্রিয় ধর্মভীরু মানুষেরা বলেন যে ঈশ্বর একজন আছেনঈশ্বর একজন হলে প্রতিটি ধর্মে এক ঈশ্বরের ভিন্ন বিধান হতো কী?আসল কথা হল ঈশ্বর,স্বর্গ,নরক,আত্মা-প্রেতাত্মা এবং অসংখ্য ধর্মীয় রীতিনীতি এসব কিছু ধান্দাবাজ মানুষের তৈরী।যে কারেণ পৃথিবীর কোন প্রান্তের কোন ধর্মের সাথে কোন ধর্মের কোন মিল নেই
  পৃথিবীর প্রধান কয়েকটি ধর্মের মধ্যে অমিল দেখুন…………………………………………
A.বিভিন্ন ধর্মের সৃষ্টি রহস্য………………………………….
খ্রীষ্টান ধর্মঃ-………ইহুদিদের উপর বার বার রোম সাম্রাজ্যের দ্বারা চরম নৃশংস অত্যাচারের প্রতিরোধ করতে না পেরে ইহুদি ধর্ম থেকে শান্তিকামী অহিংস ধর্ম,খ্রীষ্টান ধর্মের জন্ম
ইসলাম ধর্মঃ- …………আরবে পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন বিভিন্ন আরব উপজাতি গুলিকে সংঘবদ্ধ করে শক্তিশালী সমাজ গঠনের উদ্দেশে ইসলাম ধর্মের জন্ম
ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্ম (হিন্দুধর্মঃ-…………দেশের সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষকে অনার্য,দা্,দস্যু,রাক্ষস,অসুর বলে নীচপ্রতিপন্ন করে তাদেরকে শূদ্র বলে পৃথক করা এবং সেই শূদ্রদেরকে শাসন,শোষন অত্যাচার করে আজীবন দাস করে রাখার জন্য ব্রাহ্মণ্যবাদী ধর্মের জন্ম
বৌদ্ধধর্মঃ-…………………রাক্ষসরুপী ব্রাহ্মণ্য ধর্মের কবল থেকে অত্যাচারীত,নিপীড়িত,মৃতপ্রায় মানুষদের উদ্ধারের জন্য জাতপাত,বর্নহীন অহিংস ধর্ম বৌদ্ধ ধর্মের জন্ম
B.সৃষ্টির কল্পনাতে অমিল………..
খ্রীষ্টান ইসলাম ধর্মঃ-এই দুই ধর্মে খ্রীষ্টানদের গড এবং  ইসলামের আল্লাহ দিনে বিশ্ব সৃষ্টি করেছেনএখানে প্রথমেই মানুষ,পশুপাখি,জীব জগৎ………………………………………………..সৃষ্টি হয়েছে
হিন্দুধর্মঃ- এখানে ব্রহ্মা নিমেষেই অর্থাৎ কয়েক সেকেন্ডে বিশ্ব সৃষ্ট করেছেনএখানে ঈশ্বর মানুষ সৃষ্টি করেন নি,প্রথমেই  সৃষ্টি করলেন ব্রাহ্মণ চরম হাস্যকর ব্যাপার
C.আত্মা সম্পর্কে ভিন্ন ধারনা…………………..
খ্রীষ্টান ধর্মঃ-…………এই ধর্মের মানুষ আত্মার অনন্ত জীবনে বিশ্বাসীসৎ আত্মা চিরকাল সুখভোগ করে এবং অসৎ আত্মা চিরকাল দুঃখভোগ করেএই ধর্ম পুনর্জন্ম বা জন্মান্তরবাদে বিশ্বাস করে না।
ইসলাম ধর্মঃ- এই ধর্মের মানুষের বিশ্বাস মৃত্যূর পর আত্মা কবরে ঘুমায় শেষ বিচারের দিন(কেয়ামত)পর্যন্তআল্লার আদেশ মেনে চলা আত্মা শেষ বিচারে বেহেস্তে যায় এবং যারা আল্লার আদেশ মানে না তারা দোজখে যায়এই ধর্মে ও জন্মান্তরবাদ নেই।
বৌদ্ধ ধর্মঃ-……….এই ধর্ম প্রথমেই আত্মার অস্তিত্ব পূনর্জন্মকে অস্বীকার করেছিলোপরে হিন্দুধর্ম থেকে  সংক্রামিত হয়েছে ছোঁয়াছে রোগের মতএটি ঈশ্বর বিহীন ধর্মমূল বৌদ্ধধর্মে আত্মায় বিশ্বাস নেই।
হিন্দু ধর্মঃ-………এই ধর্মে আত্মা অবিনশ্বরএই আত্মার ধারনার উপর ভিত্তি করে ব্রাহ্মণ্যবাদীরা স্বর্গ,নরক,পাপপূন্য,প্রায়শ্চিত্য,শ্রাদ্ধ,পরজন্ম,কর্মফল,জন্মান্তর …………প্রভৃতি তত্ত্ব খাড়া করেছে।আর এখানে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় আত্মা নিয়ে নির্লজ্জ ব্যবসা ফেঁদেছে।এই ধর্মে ব্রাহ্মণরাই ভগবান এবং লাভবান।
আত্মার আকার…………………………
ভারতীয়রা আত্মাকে বায়বীয় পদার্থ মনে করে
মালয়ের বহু মানুষের বিশ্বাষ আত্মার রং রক্তের মত লাল,ভূট্টাদানার মত                                               @Prasanta
প্রশান্তমহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জের অনেকের ধারনা আত্মা তরল
অস্ট্রেলিয়ার অনেকে মনে করে আত্মা থাকে বুকের ভিতর আয়তনে ছোট্ট
মিশরীয়রা মনে করে আত্মা কালো, মটর দানার মত
জাপানীরা মনে করে আত্মার রং কালো
স্বামী অভেদানন্দের মতে আত্মা কুয়াশার মত
বিভিন্ন ধর্মের স্বর্গ………………
খ্রীষ্টান র্মে স্বর্গঃ- খ্রীষ্টানরা একজন্মবাদে বিশ্বাসীএদের স্বর্গে অনন্ত সুখপূনাত্মারা স্বর্গে অনন্ত সুখ পায়বাকীরা নরকে যায়
ইসলাম ধর্মে স্বর্গঃ- এদের স্বর্গ নৃত্য,গীত এবং সুন্দরী রমনী(হুরী)তে ভরাসুমিষ্ট জল,গাছের ছায়া ফলের প্রাচুর্যে সুরম্য একটি মনোরম স্হান
মন্তব্যঃ-আরবের রুক্ষ মরুভূমি যেখানে পানীয় জল,গাছ গাছালি ফল,ফুলের,নৃত্য-গীত আনন্দ উৎসবের চিহ্নই নেই সেখানে এমন স্বর্গের স্বপ্ন দেখাই তো স্বাভাবিক।
নরওয়ের স্বর্গ……….এখানে সমস্ত যুদ্ধজয়ী বীরেরা তাদের শত্রু বুনো জন্তু জানয়ারের সাথে যুদ্ধ করে কাটায়
রেড ইন্ডিয়ানদের স্বর্গ……….এখানে প্রচুর নাদুষ নুদুষ পশুরা ঘুরে বেড়ায় শিকার করো আর ভোগ করো
হিন্দুদের স্বর্গ……………..আকাশের গভীরে অতিব সুখের জায়গাকোন কাজ নেই শুধু দেবদেবীর নাম গান করো আর ঘুরে বেড়াওতবে পূন্যকর্ম শেষ হলে আবার জন্মাতে হবে

অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ মৃত্যূর পর তাদের অতৃপ্ত কামনা বাসনা চরিতার্থ করার জন্য স্বর্গের স্বপ্ন দেখেছে।আর দেবদেবী,স্বর্গ,নরক,আত্মা,প্রতাত্মা হল মানুষের মনগড়া স্বপ্নের ফসলমানুষ তার পরিবেশ পরিস্হিতি অনুযায়ী এসব কল্পনা করেছে মাত্রতাই পৃথিবীর একটি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের সাথে আর একটি প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের কোনো মিল নেই।
স্বামী অভেদানন্দ বলেন-“ আমাদের অতৃপ্ত কামনা বাসনাগুলি চরিতার্থ করার জায়গা হিসাবে আমরা স্বর্গ,নরক কল্পনা করেছি’স্বপ্নের প্রাসাদের মত স্বর্গ,নরক, বাস্তবে এর কোন অস্তিত্ব নেইতবে স্বর্গ,নরক,আত্মা, নিয়ে হিন্দুধর্মে ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় যেমন নির্লজ্জ ব্যবসা করেছে এবং করছে পৃথিবীর অন্য কোনও ধর্মে তেমনটি নেই
              
prasanta kumar Mondal.
  ঃমতামত ব্যক্তিগতঃ
                 

No comments:

Post a Comment