Monday, 30 January 2017

ডঃবাবাসাহেব আম্বেদকরঃ



                                   ডঃবাবাসাহেব আম্বেদকরঃP.K.M
   ভারতের নিপীড়িত,বঞ্চিত মানুষ ও হিন্দু নারীজাতির মুক্তিদাতাঃ
শিক্ষিত ও অশিক্ষিত এবং বংশ পরম্পরায় জিনগত জাতি বিদ্বেষী ধর্মান্ধদের বলতে শোনা যায় কী করেছে আম্বেদকর?কে আম্বেদকর?এরাই ভারতের মহান জাতিবিদ্বেষী সংস্কৃতির ধারক ও বাহক যারা উঁচুজাত জাত বলে নিরক্ষর ব্রাহ্মণ পুরোহিতের পদধূলি মাথায় ঠেকায় আর নিচুজাত বলে উচ্চশিক্ষিত মানুষকে ঘৃণা করে।এরা বংশপরম্পরায় ডঃ আম্বেদকরকে অসম্মান করে চলেছে কেবল জাতিভেদের মূর্খতায়।আর এই জাতিবিদ্বেষীদের দ্বারা পরিচালিত সরকার ভারতের সংবিধানের রুপকারকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানানোর প্রয়াস দেখায় না একই করনে।এমন বর্নবিদ্বেষী বা ঘৃণ্য জাতিবিদ্বেষী অজ্ঞানীদের জানা উচিত ভারতের সংবিধান লেখার জন্য সমগ্র এশিয়ার মধ্যে একজন যোগ্য ব্যক্তি ছিলেন,তিনি হলেন ডঃ বি.আর.আম্বেদকরডঃ আম্বেদকরের শিক্ষাগত যোগ্যতা B.A,M.A,M.Sc,D.Sc,Ph.D,LLD,D.Litt,Barrister-at-Law যা ভারতের কোন রাজনীতিবিদের তো ছিলোই না,সারা ভারতের কোন ব্রাহ্মণ্যবাদীর সে যোগ্যতাই ছিলো না।ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুধর্মের জাতিভেদের জঘণ্য সূত্র অনুসারে তিনি জন্মসূত্রে অস্পৃশ্য ছিলেন।শিক্ষাগত যোগ্যতায় তিনি কিন্তু ব্রাহ্মণ্যবাদী হিন্দুধর্মের মাথায় বসার যোগ্য ছিলেন।মনুষত্ব সম্পন্ন প্রতিটি ভারতবাসীর জানা উচিত ড়ঃআম্বেদকর শুধু দলিতদের নন তিনি সমগ্র নিপীড়িত ভারতবাসীর জন্য কাজ করেছেন।জাতিবিদ্বেষীদের অবগতির জন্য নিচে কিছু মূল্যবান তথ্য দিলাম।

Ø  জর্জ বার্নাড শ বলেন-“ডঃ আম্বেদকরের বর্তমান ও সুদুর ভবিষ্যৎকে দেখার আধ্যাত্মিক অন্তর্দৃষ্টি ছিল”।
Ø বিশ্ব খ্যাত বিজ্ঞানী আইনস্টাইন বলেন-পন্ডিতের সংখ্যা অনেক আছে;কিন্তু ডঃ আম্বেদকরের মত জ্ঞানী ও মহান শিক্ষক খুবই কম আছেন”।
Breverley Nichols- বলেন “Dr. Ambedkar was one of six best brains of the World”.
Ø ডঃ রাজেন্দ্রপ্রসাদ বলেন-“ঈশ্বরকে অনেক ধন্যবাদ যে,আমরা একজন যোগ্যতম ব্যক্তিকে ভারতের সংবিধান রচনা করার জন্য বেছে নিয়েছি”।
Ø ডঃ আম্বেদকরের জীবনীকার ধনঞ্জয় কীরের মতে-“He was the only leader of India who attained the highest degree in the academic world”.

Ø  তিনি প্রথম ব্যক্তি যিনি ১৯৩৮ সালেই জন্ম নিয়ন্ত্রনের কথা বলেছিলেন।

Ø ১৯৪২ সালে শ্রমমন্ত্রী থাকা কালীনঃ-
ভারতের শ্রমিকশ্রেনীর ভগবান বলে যদি কেউ থাকেন তিনি বাবা সাহেব আম্বেদকর।কারন শ্রমিকশেনীর মানুষ নারীপুরুষ যে সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে তা কিন্তু বাবা সাহেবের দান।
1.     সরকার,মালিক ও শ্রমিকদের শান্তিপূর্ন আলোচনাঃ- (Tripartite Labour Confererence)  তিনিই প্রথম চালু করেন।
2.     কলকারখানার পরিচালনায় শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব তাঁর অবদান।(Joint Labour Management Committee ) তিনি গঠন করেন।
3.     ভারতবর্ষে তিনি প্রথম শ্রমিক কর্মচারী নিয়োগের জন্য-Employment Exchange গঠন করেন।
4.     শ্রমিক শ্রেনীর মঙ্গলের জন্য-Trade union গঠনের আইন তিনি পাশ করেন।
5.     শ্রমিকদের কাজের সময় কমিয়ে ১০ থেকে ঘন্টা করেন এবং Over time salary  দেবার আইন পাশ করান।
6.     শ্রমিকদের বেতন্‌,খাদ্য্‌,পোশাক-শিক্ষা-প্রশিক্ষন প্রভৃতির জন্য শ্রম অনুসন্ধান সমিতি  গঠন করেন।Labour Investigation Committee তার সৃষ্টি।
7.     কয়লা শ্রমিকদের জন্য-  COAL Mine Labour Welfare FUND  তিনিই গঠন করেছিলেন।
8.     তিনিই নারী-পুরুষ বেতনের বৈষম্য দুর করে সমান বেতনের ব্যবস্থা করেন।
9.     নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটির ব্যবস্হা করেন।
10.                        কর্মরত অবস্হায় কোন শ্রমিক আহত বা মৃত হলে উপযুক্ত ক্ষতিপূরনের আইন পাশ করান।

“হিন্দু কোড বিল”-
গোঁড়া হিন্দুদের বাধায় নেহেরু এই বিল পাশ করতে পারেন নি।তাই আম্বেদকর মন্ত্রীত্ব  থেকে ইস্তফা দেন।কি ছিলো এই বিলে ?
নারীজাতিকে প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা ও মুক্তি তিনিই দিয়েছিলেনঃ-
১।বাল্য বিবাহ রদ-নারী শিক্ষার স্বার্থে মেয়েদের বিয়ের বয়স ১৬ করেছিলেন।
২।বহুবিবাহ প্রথা রদ-প্রথম স্ত্রী থাকতে দ্বিতীয় স্ত্রী গ্রহন করা যাবে না।
৩।স্বামী ত্যাগের অধিকার- এযাবৎ স্বামী স্ত্রীকে ত্যাগ করতো তিনি এই বিলে স্ত্রীকেও অত্যাচারী স্বামীকে ত্যাগ করার অধিকার দেন।
৪।অর্থনৈতিক অধিকার-তিনিই প্রথম এই বিলে পিতার সম্পত্তিতে কন্যার সম অধিকার দান করেন।
৫।শিশু দত্তক নেওয়ার অধিকার-বিধবা নারী তার ইচ্ছামত শিশু দত্তক নিতে পারবে।

সংবিধান তৈরীর মাধ্যমে তিনি হিন্দুধর্মের জঘণ্য জাতিভেদের অত্যাচার,অবিচার ও শোষণের হাত থেকে নিপীড়িত মানুষদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন।
রামমোহন ও বিদ্যাসাগরের পর ব্রাহ্মণ্যবাদী নর ঘাতকদের হাত থেকে হিন্দু নারীর পরিপূর্ণ মূক্তি দিয়েছেন বাবা সাহেব আম্বেদকর।

দুঃখের বিষয় অধিকাংশ শিক্ষিত নারী,পুরুষ তাদের মুক্তি দাতাদের চেনে না।

                             @PRASANTA KUMAR MONDAL.

No comments:

Post a Comment